চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন গেইটে বহিরাগতদের চাঁদাবাজি ও হামলা-মারধরের প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পণ্য পরিবহণকারী শ্রমিকরা। তাদের অভিযোগ, বিএনপি কর্মী পরিচয় দিয়ে বন্দরের প্রতিটি গেইটে থাকা কিছু বহিরাগত তরুণ-যুবক গাড়ি প্রবেশের সময় জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে। এর প্রতিবাদ করায় শ্রমিকদের ওপর দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে নগরীর নিমতলা মোড়ে ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ পণ্য পরিবহণকারী বিভিন্ন যানবাহন রেখে সড়কে ব্যারিকেড তৈরি করেন শ্রমিকরা। তবে পুলিশ ও বন্দর কর্মকর্তাদের আশ্বাসের পর ৫টার দিকে তারা সড়ক ছেড়ে যান। অবরোধের কারণে ব্যস্ততম নিমতলা মোড়সড় আশপাশের এলাকায় সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রাম ট্রাক-কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন গেইটে সারাদিন বহিরাগত কিছু ছেলে দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা গাড়ি নিয়ে ঢোকার সময় তারা গেইটে আমাদের আটকে জোর করে ১০০, ১৫০ টাকা আদায় করে। গত একমাস ধরে এই অত্যাচার করছে তারা। বন্দরের নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশও তাদের বাধা দেয় না। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করার পর সিকিউরিটি অফিসার আমাদের ডেকেছিলেন গতকাল (মঙ্গলবার)। উনারা বলেছেন- আমরা বন্দরের নির্ধারিত গেইট ফি ৫৭ টাকা ৫০ পয়সার পর আর কাউকে যেন কোনো টাকা না দিই।’

চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: সারাবাংলা
‘সেই নির্দেশ অনুযায়ী, আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা আজ (বুধবার) সকাল থেকে বহিরাগতদের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এজন্য সকালে প্রথমে কয়েকজন শ্রমিক ভাইকে তারা মারধর করে। এটা জানার পর আমরা দুপুরে বন্দরের দুই নম্বর গেইটের সামনে যায়। তখন বহিরাগতরা সবাই একজোট হয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছিলাম।’
পরে পুলিশ ও বন্দরের কর্মকর্তাদের আশ্বাস পেয়ে ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হয়েছে বলে ওমর ফারুক জানান। বহিরাগত কারা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এরা নিজেদের বিএনপির কর্মী পরিচয় দেয়। এদের মধ্যে ফকিরহাট, গোসাইলডাঙা, মাদারবাড়ি দুই নম্বর গলির ছেলেপেলে আছে। তারা একেক গ্রুপ বন্দরের একেক গেইট নিয়ন্ত্রণ করে। বন্দরে ঢোকার সময় গাড়ি আটকে টাকা দিতে বাধ্য করে। ১০০ বা ১৫০ টাকার মতো নেয়, সেখান থেকে গাড়ির গেইট-ফি বাবদ ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা বন্দরের ডেস্কে জমা দিয়ে বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়।’
জানতে চাইলে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘পরিবহণ শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। ঘণ্টাখানেকের মতো উনারা রাস্তায় ছিলেন। উনারা বন্দরের গেইটে অবৈধভাবে বহিরাগত লোকজনের টাকা আদায়সংক্রান্ত কিছু অভিযোগ করেছেন। আমরা তাদের থানায় আসতে বলেছি। অভিযোগ শুনে তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’