চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশীয় রফতানিমুখী বেসরকারি জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডে নির্মিত তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশটির প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটেড জাহাজগুলো কিনেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরে নবনির্মিত জাহাজ তিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। ল্যান্ডিং ক্র্যাফট জাহাজগুলো হলো- ‘মায়া’, ‘এসএমএস এমি’ ও ‘মুনা’।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমুদ্র উপকূল থেকে যাতায়াত, পণ্য পরিবহণ ও সমুদ্রবাণিজ্যের কাজে ব্যবহারযোগ্য ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ তিনটির দৈর্ঘ্য ৬৯ মিটার, প্রস্থ ১৬ মিটার এবং ড্রাফট ৩ মিটার। প্রতিটি জাহাজ ১০ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম।
ওয়েস্টার্ন মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান জানান, ২০২৩ সালে ওয়েস্টার্ন মেরিন সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটডের সঙ্গে আটটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে। এর মধ্যে আছে দু’টি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দু’টি ট্যাংকার।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম ল্যান্ডিং ক্রাফট ‘রায়ান’ এবং জুলাই মাসে দুটি টাগবোট ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ হস্তান্তর করা হয়। তিনটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট জাহাজ হস্তান্তরের পর আরও দু’টি জাহাজ ২০২৬ সালের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।

ওয়েস্টার্ন মেরিনে তৈরি ৩ জাহাজ যাচ্ছে আরব আমিরাতে। ছবি: সংগৃহীত
এর আগে, ২০১৭ সালে মারওয়ান শিপিংয়ের কাছে প্রথম জাহাজ রফতানি করে ওয়েস্টার্ন মেরিন। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১১টি দেশে মোট ৩৬টি জাহাজ রফতানি করেছে, যার বাজারমূল্য ১৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ খাতের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ওয়েস্টার্ন মেরিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে একদিনে ৩টি জাহাজ রফতানি করছে। এই মুহূর্তে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, বাংলাদেশের উচিত একক রফতানি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বের হয়ে ভিন্ন রফতানি পণ্য ও ভিন্ন রফতানি গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হওয়া। জাহাজের মতো উচ্চমূল্যের একক পণ্য রফতানির মাধ্যমেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব। ফলে বহির্বিশ্বে আমাদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠবে।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ আলহমৌদি বলেন, ‘দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। আশা করি, ভবিষতে বাংলাদেশ থেকে আরও জাহাজ আরব আমিরাতে রফতানি হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আব্দুর রহিম খান।