Saturday 22 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘নির্বাচনে পর্যবেক্ষকরা হবেন দলনিরপেক্ষ’— প্রত্যাশা রাজনৈতিক নেতাদের

‎স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,
২২ নভেম্বর ২০২৫ ২১:০৮ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ২১:২৮

জাতীয় সংলাপে রাজনৈতিক নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা হতে হবে দলনিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য-এমনটাই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতারা। পর্যবেক্ষকদের জনগণের স্বার্থে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ: পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা, রাজনৈতিক দলসমূহের প্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়ে এসব প্রত্যাশার কথা জানান তারা।

ইলেকশন অবজারভার সোসাইটি (ইওএস) এর উদ্যোগে রাজধানীর হোটেল ৭১-এ অনুষ্ঠিত এ সংলাপে রাজনৈতিক দলের নেতাদের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন কতৃক চূড়ান্ত অনুমোদনপ্রাপ্ত নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

সংলাপে অংশ নিয়ে ‎বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা হতে হবে দলনিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহনযোগ্য। আপনারা যদি যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করেন, তাহলে আপনাদের ওপর জনগনের আস্থা বাড়বে। পরের যেকোন নির্বাচনে আপনারা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন।

‎জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন বলেন, আমরা গত ১৭ বছরের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মত পর্যবেক্ষণ আর দেখতি চাই না। আমরা এবার চাইব স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষন নীতিমালা অনুযায়ী পর্যবেক্ষণ। আপনাদের সকল পজিটিভ কাজে জামায়াত আপনাদের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ।

‎এনসিপি’র যুগ্ম আহবায়ক ডা. তাসনিম জারা বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার, নির্বাচন স্বচ্ছ হওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা অনেক বেশি। আমরা আশা করব শুধুমাত্র জনগনের স্বার্থে আপনারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

‎নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমার খুব সিনসিয়ারলি চাই এসব পর্যবেক্ষণ জোট হোক এবং স্বচ্ছ পর্যবেক্ষণ হোক। প্রার্থীরা নির্বাচনের আগেই কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, এসবও তো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পর্যবেক্ষণ তো শুধু নির্বাচনের দিনের কাজ না, আগে-পরে অনেক কিছু পর্যবেক্ষণ আপনাদেরকে করতে হবে।

‎গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, পর্যবেক্ষণ নিয়ে জনগনের মনে যে নেগেটিভ ধারনা আপনারা সেই ধারনা ভেঙে দিতে হবে। আপনাদেরকে নতুন বাংলাদেশে নতুন পর্যবেক্ষণ উপহার দিতে হবে। পর্যবেক্ষণের আগে নির্বাচন কমিশনকে আস্থায় আনতে হবে, তাহলে পর্যবেক্ষণও স্বচ্ছ হবে।

‎বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কাজ শুধু নির্বাচনের দিনের কাজ নয়, এখন থেকে এবং আজকে থেকেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ আপনাদেরকে শুরু করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক সোসাইটিকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব, যদি আপনারা নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও সহযোগীতামূলক পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।

‎গনঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, এখনো বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হয় নাই, তাই রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনে সরকারকে গ্রহণ করতে হবে এবং এক্ষেত্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদেরও ভূমিকা পালন করতে হবে।

‎এছাড়াও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাসদের (রব) সাধারন সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল হেলাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মন্ডল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মহাসচিব আনিসুর রহমান দেওয়ান, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের মহাসচিব শেখ রায়হান রাহবার, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুর রব ইউসুফ, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল জলিল, খেলাফত মজলিসের (মুমুনুল হক) যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, বাংলাদেশ কংগ্রেসের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ আবুল কালাম, গনঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন এবং এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. লোকমান প্রমুখ।

‎নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংগঠন সমূহের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ফেরদৌস আহাম্মদ, বশির আহমেদ হাওলাদার, আবদুল আজিজ, হিরন্ময় মন্ডল, সাইদুল ইসলাম, ড. নাসির উদ্দীন শাহ, মোহাম্মদ সেলিম রেজা, এবিএম রাসেল, আনোয়ার হোসেন, নেসারুল ইসলাম নাজমুল, ফখরুন নাহার, সাইফুর রহমান, মো. পারভেজ রেজা এবং উত্তম কুমার চৌধুরী।

‎ইওএস’এর ‎সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন হীরা বলেন, এবারের নির্বাচনে তারা ৪২,৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত পর্যবেক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে, যাতে ভোট গ্রহণের পূর্বে, ভোটের দিন এবং ভোট-পরবর্তী পর্যায়সহ প্রতিটি ধাপ পর্যবেক্ষণের আওতায় আসে। ‎তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন শুধু সরকার ও রাজনৈতিক দলের হাতে নয়, এটি ভোটার, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম এবং বিশেষ করে প্রশিক্ষিত নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্মিলিত দায়িত্ব। জানান, নির্বাচন যেন শুধু শান্তিপূর্ণই না হয় বরং বিশ্বাসযোগ্য হয় এটাই আমাদের লক্ষ্য।

‎প্রধান সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম আপ্পি জানান, ‎‘সুষ্ঠু, স্বাধীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের স্বার্থে সব পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ, তথ্য সংগ্রহ এবং রিপোর্টিং প্রক্রিয়া কঠোরভাবে মানা হবে।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর