ঢাকা: ‘দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি : প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি ’-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫’। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগামী বুধবার থেকে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর- ০২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একযোগে সারাদেশে এ সপ্তাহ উদ্যাপিত হবে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ পদক প্রদান, বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম, র্যালি, আলোচনা, সেমিনার, কর্মশালা ও প্রদর্শনী ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। ঢাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুভেচ্ছামূলক ভিডিও বার্তা প্রদান করবেন এবং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ উদ্যাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক মান অর্জন এবং সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় আরও শক্তিশালী হবে। প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন ও জনগণকে সচেতন করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রাণিসম্পদ পদক নীতিমালা অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৫টি ক্যাটাগরিতে ১৫টি পদক প্রদান করা হবে। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ পদকে ভূষিত করা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জিডিপি-তে এ খাতের অবদান ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপি-তে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং অর্থমূল্যে প্রাণিসম্পদ জিডিপি’র আকার দাঁড়িয়েছে ৯১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।
ফরিদা আখতার বলেন, পোল্ট্রি শিল্প বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থানের খাত— যেখানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার অধিক বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে। দেশে নিবন্ধিত ৮৫ হাজার ২২৭টি বাণিজ্যিক এবং প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার প্রান্তিক পোল্ট্রি খামার রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ ডিম উৎপাদিত হচ্ছে—যা নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য।
তিনি বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) প্রতিরোধে ১৭ লাখ ডোজ টিকা, ক্ষুরা রোগ (এফএমডি) নির্মূলে নির্দিষ্ট অঞ্চলে জোনিং কার্যক্রম এবং ছাগলের পিপিআর রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৬ কোটি ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে।