চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে প্রায় আড়াই লাখ ভবন ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক উপাচার্য ও ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম।

ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডের নতুন ব্র্যান্ডের উদ্বোধন
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীতে ঐতিহ্যবাহী সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডের একটি নতুন ব্র্যান্ডের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে এ উপলক্ষ্যে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রায় আড়াই লাখ ভবন ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে। এখন আমাদের সব ভবনের অ্যাসেসমেন্ট শেষে শক্তি বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প নিতে হবে। যেসব ভবনের শক্তি বৃদ্ধি করা যাবে না, সেগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। এটা সরকার একা পারবে না, সবার দায়িত্ব আছে। কিন্তু আড়াই লাখ ভবন, এত ভবন অ্যাসেসমেন্ট ও সেগুলোর শক্তি বৃদ্ধি কে করবে ? এরমধ্যে প্রচুর ব্যক্তিগত ভবন আছে। সরকারিভাবে যদি জিরো পারসেন্ট ব্যাংক ইন্টারেস্টে অর্থায়ন করা যায় তাহলে হতে পারে।’
এর আগে, বাজারে আসা ডায়মন্ড সিমেন্টের নতুন ব্র্যান্ড দেশের প্রথম এফসিআর (FCR Expert) সিমেন্ট—ডায়মন্ড এক্সট্রা পাওয়ারের উন্মোচন করা হয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেই ব্র্যান্ড উন্মোচন করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি মানজারে খোরশেদ আলম, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী অচিত্য কুমার চক্রবর্তী এবং ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) লায়ন হাকিম আলী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, “আজ ঢালাই, কালই ব্যবহার”-এমন দ্রুত ও শক্তিশালী নির্মাণ বৈশিষ্ট্য নিয়ে বাজারে এসেছে দেশের প্রথম এফসিআর (FCR Expert) সিমেন্ট—ডায়মন্ড এক্সট্রা পাওয়ার। বর্তমান বিশ্বের জনপ্রিয় র্যাপিড হার্ডেনিং ক্যাটাগরির এই সিমেন্ট দ্রুত শক্তি অর্জনের মাধ্যমে নির্মাণে সময় ও শ্রম বাঁচায় এবং স্থাপনার দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। বিশেষভাবে ফাউন্ডেশন, কলাম ও ছাদের ঢালাইয়ে এটি সবচেয়ে উপযোগী ও টেকসই।
এতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)–এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জি এম সাদিকুল ইসলাম ‘ডায়মন্ড এক্সট্রা পাওয়ার’ সিমেন্টের বিষয়ে বলেন, ‘এই সিমেন্ট দ্রুত জমাট বাঁধে ও শক্তি সঞ্চয় করে। প্রিকাস্ট স্ল্যাব, গার্ডার, কলাম, পাইলিং, রেলওয়ে স্লিপার এবং মেরামত কাজের জন্য এটি খুবই উপযোগী।’
অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “র্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট- তিনদিনে যে স্ট্রেংথ পায় সাধারণ সিমেন্টের সেই স্ট্রেংথ পেতে সাতদিন লাগে। নতুন এই ব্র্যান্ডের সিমেন্টে ৩৫০০ পিএসআই স্ট্রেংথ আসবে তিনদিনে। এতে দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করা যাবে। সম্প্রতি ভূমিকম্পে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় যেসব ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য এই সিমেন্ট কার্যকর হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড সিমেন্টের পরিচালক খালেদা বেগম ও পরিচালক আবদুল্লাহ আল ফারহাদ এবং ফরচুন নেভিগেশনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ডিসিএল ব্লকের ম্যানেজিং পার্টনার আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদ।
ডায়মন্ড সিমেন্টের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন হাকিম আলী বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় দ্রুত নির্মাণ, অধিক শক্তি ও টেকসই অবকাঠামো নিশ্চিত করতে। দ্রুত নির্মাণ, অধিক শক্তি অর্জন এবং টেকসই অবকাঠামো নির্মাণে আমাদের নতুন ব্র্যান্ড। আমরা চাই, বাংলাদেশ আরও দ্রুত এগিয়ে যাক, স্থাপনায় আসুক বিশ্বমানের শক্তি ও স্থায়িত্ব।’
অনুষ্ঠানে, উৎপাদন, মান ও বিপননসহ নতুন পণ্যের নানা দিক তুলে ধরেন ডায়মন্ড সিমেন্টের পরিচালক এবিএম কামাল উদ্দিন ও মো. গোলাম মোস্তফা, মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুর রহিম ও মো. আরিফুল ইসলাম এবং সিনিয়র ম্যানেজার প্রকৌশলী ইশতিয়াক রায়হান মাহমুদ।