ট্রাম্পকে লন্ডনবাসীর উপহার : কমলা রঙের ‘ব্যঙ্গ পুতুল’
১৩ জুলাই ২০১৮ ১৬:২৯
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
১৮ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড খরচা করে একটি কমলা রঙের ব্যঙ্গ বেলুন লন্ডনের আকাশে উড়িয়েছে ট্রাম্প বিরোধীরা। পার্লামেন্ট স্কয়ার গার্ডেনের, ৬ মিটার লম্বা এই পুতুলটিকে মনে করা হচ্ছে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের জন্য সবচেয়ে বড় অপমান হিসেবে।
চলমান বিক্ষোভের মুখে বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে এসেছেন। রাস্তায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন এমন আশংকায় ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলেনিয়া ট্রাম্পকে হেলিকাপ্টারে করে যুক্তরাজ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে আতিথ্য দিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে বিক্ষোভকারীরা ঠিকই আশা করছেন, ট্রাম্পের জন্য বানানো ব্যঙ্গাত্মক বেলুনটি তিনি ঠিকই দেখতে পাবেন।
ট্রাম্পকে নিরাপত্তা দিতে লন্ডনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আল-জাজিরার একজন প্রতিনিধি জানান, রাস্তায় ভারী অস্ত্রবাহী নিরাপত্তা রক্ষী, প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড এবং ট্রাম্পের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী দল রয়েছে। এখন অল্প কিছু আন্দোলনকারী রাস্তায় থাকলেও শুক্রবার এই সংখ্যাটা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ট্রাম্পের সফরের প্রথম দুই এক দিনেই আলোচনার গতি প্রকৃতি ও ট্রাম্পের মনোবাসনা আন্দাজ করা যাবে। যুক্তরাজ্যে রওনা দেওয়ার আগে ট্রাম্প, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনার সমালোচনা করেছিলেন। তিনি ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাজ্যের মানুষ যে আশায় ব্রেক্সিটে ভোট দিয়েছিল তা পূরণ হবে কিনা তিনি নিশ্চিত নন।
প্রত্যুত্তরে থেরেসা মে বলেছেন, আমরা যুক্তরাজ্যের জনগণের অর্থ, আইন, সীমান্ত ও ভোটের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রথম থেকেই ব্রেক্সিটক সমর্থন করেন। কিন্তু পররাষ্ট্র সচিব বরিস জনশন, ব্রেক্সিট মন্ত্রী ডেভিডসহ যুক্তরাজ্যের উচ্চপদস্থ তিনজন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন নিয়ে মতের অমিল হওয়ায় পদত্যাগ করেছেন। ট্রাম্প লন্ডন সফরকালে ব্রেক্সিট আন্দোলনের নেতা বরিস জনসনের সাথে কথা বলতে পারেন।
যদিও থেরেসা মে ট্রাম্প সম্পর্কে বেশ নমনীয়। ট্রাম্পের আগমনে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো মিত্র। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার ফলে এটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ট্রাম্পের যুক্তরাজ্যে আগমণ শুরু থেকেই নিতে পারছে না বৃটেনের সাধারণ মানুষ। ইসলাম ধর্ম বিদ্বেষী কথা, শারীরিকভাবে অক্ষমদের হেয় করা, এলজিবিটি কম্যুনিটি নিয়ে বদানুবাদ ইত্যাদি বৃটেনের লোকজনকে ট্রাম্পের উপর খেপিয়ে তুলেছে। আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘ট্রাম্প বর্ণবাদী ও ধর্মান্ধ। আমরা তাকে পছন্দ করিনা।’
আগামী ২০১৯ সালের মার্চে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার অন্যতম মিত্র যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন হবে ট্রাম্পের এই সফরে সে বিষয় গুরুত্ব পাবে। এই সফরে বেশ কিছু বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সারাবাংলা/এনএইচ