Tuesday 25 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সিওপিডি প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৪৮

ঢাকা: বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, সিওপিডি প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সিওপিডি প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ও নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। সিওপিডি নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। গবেষণার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, জনগণ ও রোগীদের প্রয়োজন এবং কল্যাণে কাজে আসে সে ধরণের গবেষণায় দৃষ্টি দিতে হবে। গবেষণা ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন যে, অনেক টাকা ব্যয় করে গবেষণা করলেই সেটা যে বড় গবেষণা হবে বা রোগী, জনগণের কল্যাণে আসবে তা কিন্তু নয়।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে বিএমইউ এর মিল্টন হলে বিশ্ব সিওপিডি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

বিএমইউ উপাচার্য বলেন, সিওপিডি এখন বাংলাদেশের একটি গভীর জনস্বাস্থ্য সংকট। ধূমপান, বায়ুদূষণ, ইনডোর স্মোক এসব নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কোনো সমাধান হবে না। আমাদের চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা, নীতিনির্ধারণ ও জাতীয় স্বাস্থ্যসেবায় সিওপিডিকে অগ্রাধিকারে আনতে হবে। দ্রুত শনাক্তকরণ, কমিউনিটি–স্তরের স্ক্রিনিং, এবং আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করাই বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আজকের এই আয়োজন আগামীতে গবেষণা, রেসিডেন্সি ট্রেনিং, পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন কেন্দ্র এবং ডিজিজ রেজিস্ট্রি তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।

সভায় চেস্ট অ্যান্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে সিওপিডি প্রতিরোধ করা সম্ভব। একইসঙ্গে গবেষণা কার্যক্রমকেও গুরুত্ব দিতে হবে।

বিএমইউর সম্মানিত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে ধূমপান পরিহার, বায়ুদূষণ হ্রাস করাসহ সকল ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলায় গুরুত্ব দিয়ে সমন্বিত ও জাতীয় পর্যায়ে কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। গ্রামে রান্নার চুলা ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মায়েদেরকে অবহিত করতে হবে। সিওপিডির রোগীরা যাতে গাইডলাইনভিত্তিক যথাযথ চিকিৎসা পায় সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় গণমানুষকে সচেতন করা জরুরি। সিওপিডি প্রতিরোধে পরিবেশ দুষণ প্রতিরোধ, ধূমপান পরিহার অপরিহার্য। উন্নয়ন ও রোগ প্রতিরোধে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।

এসময় রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ বলেন, মনে রাখতে হবে সিওপিডি প্রতিরোধযোগ্য। সিওপিডি প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় শক্তি। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা এই রোগের বোঝা প্রায় অর্ধেক পর্যন্ত কমাতে পারব। আজকের সেমিনার ও আলোচনা স্পষ্ট করেছে সিপিওডি মোকাবিলার জন্য সমন্বিত গবেষণা, রোগী শিক্ষা, ধূমপান নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি। বিএমইউ এ বিষয়ে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। আজকের আলোচনার সুপারিশসমূহ আগামী বছরের অ্যাকশন প্ল্যানে যুক্ত করা হবে।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, সিওপিডির প্রকৃত বোঝা জানতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ ও স্ক্রিনিং জরুরি। সিওপিডি নিয়ে জাতীয় ডাটাবেজ ও মাল্টিসেন্টার গবেষণা আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। বাংলাদেশে সিওপিডি রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। ধূমপান, বায়ুদূষণ ও ইনডোর স্মোক প্রধান ঝুঁকি। প্রাথমিক পর্যায়ে স্পাইরোমেট্রি অপরিহার্য। গাইডলাইনভিত্তিক চিকিৎসা ও রিহ্যাবিলিটেশন জীবনমান উন্নত করবে। কমিউনিটি পর্যায়ে স্ক্রিনিং প্রয়োজন, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল ও জাতীয় সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। আলোচনা শেষে বক্তারা বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি এবং চেস্ট অ্যান্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন ভবিষ্যতে সিওপিডির বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী জাতীয় কর্মসূচি হাতে নেওয়ার ঘোষণা দেন।

আলোচনা সভায় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইরতেকা রহমান, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল কাদের, অধ্যাপক ডা. কাজী মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, এনআইডিসিএইচ এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন, ডিএমসির রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আদনান ইউসুফ চৌধুরী, সিএইচএবি এর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. গোলাম সারোয়ার লিয়াকত হোসেন ভূঁইয়া, রেসপিরেটরি বিভাগের ডা. রাজশিস চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডা. মানাল মিজানুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর