ঠাকুরগাঁও: বাউল শিল্পীদের ডাকা প্রতিবাদী কর্মসূচীতে হামলা চালিয়েছে তৌহিদি জনতা। এ সময় দুই বাউল সমর্থককে বেধরক মারধর করে আহত করেন তারা।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। বিষটি নিশ্চিত করেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সারোয়ারে আলম।
আহতরা হলেন- বাউল শিল্পী সামশুল হক চিসতি এবং মকলেস পাগলা। সামশুল হক চিসতির বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানায় এবং মকলেস পাগলার বাড়ি ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের হঠাৎ পাড়ায়।
পুলিশ জানায়, বাউল সাধকদের ওপর হামলা ও বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ের বাউল সমর্থকরা এক প্রতিবাদ কর্মসূচীর ডাক দিয়েছিল। ওই কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে বাউল শিল্পীরা একত্রিত হতে থাকে। এর মধ্যে কয়েকজন বাউল শিল্পী আদালত চত্বরে চা-নাস্তা খেতে গেলে তৌহিদী জনতা নামে শতাধিক মানুষ তাদের ওপর হামলা চালায় এবং মারধর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাউল শিল্পীরা তৌহিদী জনতার হাত থেকে বাঁচার জন্য জেলা আইনজীবী সমিতিতে আশ্রয় নিলে। সেখানেও লাঠিসোটা নিয়ে তৌহিদী জনতা হামলা চালায়।
ঠাকুরগাঁওয়ে বাউল সমর্থক সোহেল রানা বলেন, আমরা বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। নবীর রাসুল সা. যখন ছিলেন তার জামানায় কি তাকে নিয়ে কুটূক্তি-ষড়যন্ত্র হয়নি। ইসলাম নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়নি। তাই বলে কি তিনি কাউকে হত্যা করেছিলেন, কারও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছিলেন। তৌহিদী জনতার নামে যে নৈরাজ্য চলছে, এটা নবীর কোনো সুন্নত নয়।
এই বিষয়ে তৌহিদি জনতার সদস্য আল-আমিন বলেন, তিনি আল্লাহর নামে উল্টা-পাল্টা বলবে আর তাকে পিটাইলে তাকে মব বলে এটা কোন সুশীল, আর আমার দেশে অনেক সুশীল দেখেছি যারা ইসলামকে ধ্বংস করার পায়তারা করে। এদের আর সুযোগ দেওয়া হবে না।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সারোয়ারে আলম খান বলেন, আমরা ঘটনা জানার পর পরেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এখনও এই বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।