ঢাকা: দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী ও নারীদের জন্য আগাম সতর্কবার্তা আরও সহজলভ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা জরুরি বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, প্রতিবন্ধীতার ধরন অনুযায়ী ব্রেইল, শ্রবণ সংকেত, ইশারা ভাষা বা বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যবহার করতে হবে। একইসঙ্গে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাসের পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘ডিসেমিনেশন অব স্টাডি: অবজারভেশন্স অব ডিজঅ্যাবিলিটি–ইনক্লুসিভ অ্যান্ড জেন্ডার–রেসপনসিভ আরলি ওয়ার্নিং ইন খুলনা অ্যান্ড সাতক্ষীরা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব মতামত উঠে আসে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কারিতাস বাংলাদেশ ও অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। স্বাগত বক্তব্য দেন কারিতাস বাংলাদেশের প্রোগ্রাম পরিচালক অপূর্ব মুরং।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষণার প্রধান এ. এম. নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, খুলনা ও সাতক্ষীরার প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ওপর ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা গবেষণায় দেখা যায় যে দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া—বিশেষ করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও নারীদের জন্য—একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই সরকার, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ, ডিজএবল চাইল্ড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাসরিন জাহান এবং সিবিএম গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রজেক্ট ডিরেক্টর আব্দুল্লাহ আল মামুন। আলোচনা পরিচালনা করেন অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা।
বক্তারা বলেন, সাধারণ যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যবহার, পছন্দের ভাষায় বার্তা পাঠানোসহ বিশেষ মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। গর্ভবতী নারী, কিশোরী ও সন্তান ধারণে সক্ষম নারীদের জন্য আলাদা টয়লেট, স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রীসহ বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে। ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রেও আলাদা লাইন বা বিশেষ সহায়তা প্রচলনের পরামর্শ দেন তারা।
এছাড়া জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস নীতিমালা প্রণয়নে লিঙ্গ সমতা ও প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলেও বক্তারা মত দেন। তারা বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচল উপযোগী র্যাম্প এবং নারীদের জন্য নিরাপদ ও পৃথক টয়লেটের মতো সুবিধা নিশ্চিত করাই হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মূল পদক্ষেপ।