Thursday 27 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এক বছরে বেড়েছে ১১৬%
রাষ্ট্রায়ত্ত ৮ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৪২৯ কোটি টাকা

সোহেল রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ নভেম্বর ২০২৫ ২১:০৫ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ২১:১১

– ছবি : প্রতীকী

ঢাকা: সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৯৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে একমাত্র ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন’ (বিপিসি) ছাড়া অবশিষ্ট ৮টি প্রতিষ্ঠান এবারের তালিকায়ও রয়েছে। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৩০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

অর্থ বিভাগ-এর হিসাব মতে, গত জুন শেষে প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট পুঞ্জিভূত ব্যাংক ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে (জুন ২০২৪) প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৫ হাজার ১২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসাবে গত এক বছরে ৮টি প্রতিষ্ঠানের মোট বকেয়া ঋণ বেড়েছে ৭ হাজার ৮৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ‘বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন’ (বিজেএমসি)-এর খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি। এর পরিমাণ ৩৭৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। গতবছর (জুন ২০২৪) সংস্থাটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মূলত: বিজেএমসি’র খেলাপি ঋণ দ্বিগুনেরও বেশি হওয়ার কারণে সার্বিকভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৬৬৭ কোটি ৮ লাখ টাকা।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ‘বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন’ (বিটিএমসি) এবং ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন’ (বিএডিসি)। গত জুন শেষে বিটিএমসি’র মোট বকেয়া ব্যাংক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা; এর মধ্যে ২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকাই খেলাপি।

অন্যদিকে বিএডিসি’র মোট বকেয়ার ব্যাংক ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১৮ হাজার ৫৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা; এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে- ‘বাংলাদেশ চা বোর্ড’ (বিটিবি)-এর মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা; এর পুরোটাই খেলাপি।

শতভাগ খেলাপির তালিকায় আরও রয়েছে ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা’ (বিআরটিসি)। প্রতিষ্ঠানটির মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৫৭ লাখ টাকা; এর পুরোটাই খেলাপি।

এছাড়া বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)-এর খেলাপি ঋণ ৭৪ লাখ টাকা হলেও প্রতিষ্ঠানটির মোট বকেয়া ঋণ ৮ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা।

একইভাবে ‘ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’ (টিসিবি)-এর মোট বকেয়া ঋণ হচ্ছে ৭ হাজার ৩৩৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা; এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ২০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)-এর খেলাপি ঋণ মাত্র ২ লাখ টাকা; কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির মোট বকেয়া ঋণ ৮ হাজার ৬২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বাজেট উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর বড় অঙ্কের বকেয়া ঋণ এবং কম-বেশি খেলাপির দায় বহন করে চলেছে। দেনা পরিশোধে এসব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো যেমন উদাসীন, তেমনি ঋণ আদায়ের ব্যাপারে ব্যাংকগুলোরও তেমন তাগিদ নেই বলে জানা যায়।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যেসব ব্যাংকের ঋণ খেলাপি হয়েছে, সেগুলো সবই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক)। প্রতিবছর এসব ব্যাংকে সংস্থাগুলোর ঋণ বাড়ছে।

সূত্র মতে, কিছু সংস্থার কাছে অনেক বছর আগের পাওনা আটকে আছে। মামলাও আছে। নিষ্পত্তি না হওয়ায় টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর