রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ১৭ বছর পরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ছাত্রসংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, রেজিস্ট্রার দফতর থেকে সরবরাহকৃত হলভিত্তিক ভোটার তালিকায় ব্যাপক ভুল, দ্বৈত নাম, বাদ পড়া নাম, অছাত্রের নাম অন্তর্ভুক্তি ও হল সংযুক্তির অসঙ্গতি পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে দুদিন ধরে চলা মনোনয়নপত্র বিতরণও তাৎক্ষণিক বন্ধ করা হয়েছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে সহকারী নির্বাচন কমিশনার ড. মোহসীনা আহসান ব্রাকসু স্থগিত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘ভুল ও অসঙ্গতিপূর্ণ তালিকার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন চালালে পুরো প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সঠিক, হালনাগাদ ও ত্রুটিমুক্ত হলভিত্তিক ভোটার তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত মনোনয়ন গ্রহণসহ তফসিলের সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব দফতর থেকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেখানে কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচন কমিশনকে হেয় করার চেষ্টা করেছে কিনা—তার তদন্তের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিক আহ্বান জানিয়েছি।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. শাহজামান উপস্থিত থেকে বলেন, ‘আমরা কোনো চাপের কাছে মাথা নত করব না। ত্রুটিপূর্ণ তালিকায় নির্বাচন করলে ভোটের গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। সঠিক তালিকা পাওয়া মাত্রই নতুন তফসিল ঘোষণা করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন সম্পন্ন করব।’
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, একই শিক্ষার্থীর নাম একাধিক হলে, ভর্তিচ্যুত ও ছাত্রত্ব বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত, বর্তমানে হলে বসবাস না করেও অনেকের নাম হলভিত্তিক তালিকায় ও কিছু অছাত্র ও সাবেক শিক্ষার্থীর নাম অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ রয়েছে।
সম্ভাব্য ভিপি প্রার্থী রাহাত হোসেন বলেন, ‘আমরা অনশন করে, রক্ত দিয়ে এই নির্বাচন এনেছি। এখন প্রশাসনের গড়িমসিতে সব শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এটা ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু না।’
বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন: ‘মনোনয়ন তুললাম, এখন বলা হচ্ছে স্থগিত। কার দোষ? রেজিস্ট্রারের না উপাচার্যের?’
অর্থনীতি বিভাগের মেহেদী হাসান বলেন৷ ‘যে প্রশাসন নিজেই ইউজিসি নীতিমালা ভেঙে রেজিস্ট্রার নিয়োগ করে, তার কাছে সঠিক তালিকা আশা করাটাই ভুল ছিল।’
রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী—দুজনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে। প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলে জানাব।’