ঢাকা: গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ শুনানি নেবেন।
শুনানিতে প্রথমে প্রসিকিউশন যুক্তি উপস্থাপন করবে। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বক্তব্য দেবেন। যেসব আসামি পলাতক তাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করবেন নিয়োগপ্রাপ্ত স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা।
২৩ নভেম্বর শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। সেদিন ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগারে থাকা মামলার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাদের উপস্থিতিতেই শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়। যদিও আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়াল হাজিরার আবেদন করেছিলেন, এ বিষয়ে আজই সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা।
গুমের ঘটনায় দায়ের করা এই মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়ানোর আবেদন করেছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। পরে তাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি এরই মধ্যে মৌখিকভাবে মামলায় না লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
গ্রেফতার ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন—ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অব.), কর্নেল মো. মশিউর রহমান (সাবেক পরিচালক-র্যাব গোয়েন্দা শাখা), লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন এবং সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ।
উল্লেখ্য, ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরার জন্য সাত দিনের মধ্যে জাতীয় দুই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়েও তারা হাজির না হওয়ায় আদালত তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ করে। ৮ অক্টোবর প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল ১৭ জনের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।