পিরোজপুর: পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ. টি. এম. শামসুল আলমের বিরুদ্ধে আবারও গুরুতর দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। বার্ষিক পরীক্ষা সামনে রেখে গভীর রাত ১টা ৫১ মিনিটে পরীক্ষার নোটিশ এসএমএস পাঠানোর পর বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষ তালাবদ্ধ।
বিদ্যালয়ে উপস্থিত অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের খোঁজ করলে কেউই তার অবস্থান জানাতে পারেননি। পরে তার মোবাইল নম্বরে কল করলে তিনি জানান, তিনি ১-৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে আছেন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রিতা রানী বল জানান, ‘সার্ভারের সমস্যার কারণে পরীক্ষার এসএমএস দেরিতে পৌঁছেছে, তবে পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে।’
কিন্তু বড় প্রশ্ন হলো, এই ছুটি কে অনুমোদন করল? এ বিষয়ে বরিশালের আঞ্চলিক উপ-পরিচালক (শিক্ষা) মো জাহাঙ্গীর হোসেনকে ফোন করলে তিনি জানান, ‘পিরোজপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কোনো ছুটি আমি অনুমোদন করিনি। বিষয়টি আমি জানতাম না। এখনই তার সঙ্গে কথা বলে তাকে শোকজ করব।’
অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম প্রায়শই নানা অজুহাতে ছুটিতে থাকেন এবং কর্মস্থলে আসেন না। ইতিপূর্বেও বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে গ্রহণের সময় তার দায়িত্বহীনতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) প্রেস রিলিজ দিয়ে জানিয়েছিল শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কর্মবিরতি সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। তাই ৩ ডিসেম্বর থেকে সকল বিদ্যালয়ে পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরীক্ষায় সহযোগিতার আহ্বান জানানো হলো।
কিন্তু পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সময় মতো ঘোষণা না দিয়ে গভীর রাতে বার্তা পাঠিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন এবং পরীক্ষার দিনই নিজেকে ছুটিতে দেখিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বহীনতা, অনুমোদনহীন ছুটি, অস্বচ্ছ আচরণ এবং বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা—সবকিছু নিয়ে এখন স্থানীয়ভাবে তীব্র আলোচনা চলছে।