Thursday 16 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চাঁদার দ্বন্দ্বেই আ.লীগ নেতা ফরহাদ হত্যা, খুনিরা পায় ১ লাখ টাকা


১৪ জুলাই ২০১৮ ১৬:২৭ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ১৬:৩৯

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: অটোরিক্সা স্ট্যান্ড ও ডিস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করা চাঁদার ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয় বাড্ডার আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলী। পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডে বাস্তবায়নে জড়িত ছিলো ভাড়াটে খুনিরা। হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদের ১ লাখ টাকা দিয়েছিল পরিকল্পনাকারীরা।

শনিবার (১৪ জুলাই) ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের (ডিএমিপ) মিডিয়া শাখায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন। গতকাল রাজধানীর গুলশান ও শাহ আলী থানা থেকে বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী হত্যায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব তথ্য উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আসামিরা হলো- মো. জাকির হোসেন, মো. আরিফ মিয়া, মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে অনির, মো. বদরুল হুদা ওরফে সৌরভ ও মো. বিল্লাল হোসেন ওরফে রনি। আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য তাদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে জানান যুগ্ম কমিশনার।

আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, বাড্ডা এলাকায় দীর্ঘদিন আধিপত্য এবং চাঁদার টাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলীর সঙ্গে ওই এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী রমজানের দ্বন্দ্ব চলছিল। এ কারণে ফরহাদকে হত্যার পরিকল্পনা করে রমজান। তাই তার পরিচিত অপর দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদী ও কমিন্স ওরফে আশিককে দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে রমজান। পরিকল্পনার পর রমজান দেশ ছেড়ে ভারত চলে যায়। যাওয়ার সময় তার আপন ছোট ভাই সুজন এবং অপর দুই সহযোগী জাকির ও আরিফের উপর হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব দিয়ে যায় সে।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদীর বাংলাদেশের সামরিক কমান্ডার অমিত তাদের ভাড়াটে শ্যুটার নূর ইসলাম, অনির, সৌরভ ও সাদকে হত্যাকাণ্ডের মূল দায়িত্ব দেয়। তাদের পরিকল্পনা এবং রমজানের ভাই ও সহযোগিদের সহযোগিতায় গত জুলাইয়ের ১৫ তারিখ সকালে বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে একত্রিত হয়। তারপর দুপুরে জুমার নামাজ শেষে ফরহাদ আলীকে টার্গেট করে শ্যুটাররা। একপর্যায়ে সহযোগী আরিফের সহযোগিতায় ফরহাদকে চিহ্নিত করে শ্যুটারর গুলি করে হত্যা করে।

ফরহাদকে হত্যার পর খুনিরা সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলশান-১ এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এরপর সেখান থেকে পালিয়ে তারা মিরপুরের যায় হত্যায় মূল নির্দেশদাতা অমিতের কাছে। সেখানে অমিতের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নেয় তারা। এ হত্যাকাণ্ডের পর রমজানের ছোট ভাই সুজনও দেশ ত্যাগ করে। পরে সে দেশে ফিরে এলে পুলিশ গত ১০ জুলাই তাকে গ্রেফতার করে। তার জবানবন্দির প্রেক্ষিতেই গতকাল বাকি আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বাতেন বলেন, ‘তারা কে কোন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত তা স্পষ্ট নয়। তাছাড়া আমাদের এটার প্রয়োজন ছিল না তাই এটা নিয়ে আমরা এখনও কোনো অনুসন্ধান করিনি। তবে আশিক বিএনপির আমলে দলীয় ক্যাডার পরিচয়ে চলতো।’

তিনি আরও জানান, ফরহাদ আলী হত্যায় জড়িত মূল হত্যাকারী নূর ইসলাম ও নির্দেশদাতা অমিত সম্প্রতি পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা আরও এক ব্যবসায়ীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। তবে তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীরা ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বলে জানান যুগ্ম কমিশনার।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএইচ/এমও

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর