Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উত্তরাঞ্চলে হচ্ছে ২০ বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র


১৫ জুলাই ২০১৮ ০৭:৪৯

।। জোসনা জামান, স্টাফ করসপনডেন্ট ।।

ঢাকা: দেশের উত্তরাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ২০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বন্যার সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বছরের অন্য সময়গুলোতে এসব কেন্দ্র ব্যবহার করে ২৫টি উপজেলার জনগণকে ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একইসাথে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিষয়ে গবেষণা এবং আগাম সতর্কতা নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ‘অবকাঠামোগত দক্ষতা উন্নয়ন ও তথ্যের মাধ্যমে দুঃস্থ জনগোষ্ঠীর সহনশীলতা বৃদ্ধি প্রকল্প (প্রভাতি)’ নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৭৫৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এরই মধ্যে প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এস এন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী সারাবাংলা’কে বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা অববাহিকার নির্বাচিত উপজেলাগুলোর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং বন্যাপ্রবণ নির্বাচিত ২৫টি উপজেলার জনগনকে ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এই কেন্দ্রগুলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর বিষয়ে গবেষণা ও আগাম সতকর্তা বার্তা দেওয়া এবং জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো ও কমিউনিটি শেল্টার নির্মাণের মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্প।

বিজ্ঞাপন

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পৃথিবীর প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দেশের শতকরা ৯০ ভাগ ভূমি নিম্নাঞ্চল, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ মিটার বা তার কম উচ্চতায় অবস্থিত। ১৯৯৮ সালের বন্যায় দেশের প্রায় ৭০ ভাগ অঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে যায়। তাছাড়া প্রতিবছরই বন্যা, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগে থাকে। দেশের মধ্য-উত্তরাঞ্চল মৌসুমী বন্যা, নদীভাঙ্গন ও তুলনামূলকভাবে রাস্তাঘাট কম হওয়ায় কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে সমস্যা হয় এবং পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয় কৃষক।

মন্ত্রণালয় বলছে, এ জন্য দেশের উত্তর-মধ্যাঞ্চলের ছয়টি জেলার ২৫টি উপজেলায় ইফাদের আর্থিক সহযোগিতায় মোট ৭৫৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য প্রভাতী প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হলে ২০১৮ সালের ৭ জুন প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোট ৭৫৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে— ২০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ৬১ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন, ২৩৫ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক উন্নয়ন, ২৫ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক উন্নয়ন আরসিসি, ১ হাজার ৬৮৮ মিটার কালভার্ট ও ক্রস ড্রেন নির্মাণ, ৬০ কিলোমিটার সড়ক পুনর্বাসন, ১৩৫টি বাজার, ৮২২ এলসিএস সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এলসিএস ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, ৩১০ এলসিএস বাজার উন্নয়নের জন্য এলসিএসদেরকে প্রশিক্ষণ, ছয় ব্যাচ প্রকৌশলী স্টাফদের প্রশিক্ষণ, ১৫ হাজার ৪৪ জনের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং ৩০ হাজার জনের এলসিএস ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

এই প্রকল্প যেসব জেলায় বাস্তবায়ন করা হবে, সেগুলো হলো—   ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা; রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, সাদুল্যাপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা; কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর, চিলমারী, রৌমারী, উলিপুর, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলা; রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলা; নীলফামারী জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা এবং লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলা।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর