ঢাকা: ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা ফয়সালের স্ত্রী-শ্যালক ও মেয়ে বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়াকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের আজ সন্ধ্যায় পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে, গত শুক্রবার দুপুর ২টার পর রাজধানীর পল্টন বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেলযোগে আসা দুর্বৃত্তরা খুব কাছ থেকে হত্যার উদ্দেশে ওসমান হাদিকে গুলি করে। এরপর তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওইদিন রাতেই তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ বলেছে, ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ফয়সাল করিমকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে তারাই ওসমান হাদিকে গুলি করেছে। আর গুলিটা করেছে ফয়সাল। হাদিকে যে মোটরসাইকেল থেকে গুলি করা হয়েছে সেটি উদ্ধার করা হয়েছে।
ফয়সাল দেশ থেকে পালিয়েছে কিনা- এবিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ফয়সালের পাসপোর্ট নম্বর পেয়ে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। আমরা বিজিবিকে সতর্ক করেছি এমন কেউ যেন চলে যেতে না পারে।
এদিকে, ফয়সালকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
জানা গেছে, ফয়সাল করিম নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে মাসে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হয়েছিলেন।
২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আদাবর থানায় একটি মামলায় গত ৭ নভেম্বর আদাবর থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেফতার করেছিল র্যাব। তখন তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, পাঁচটি গুলি, তিনটি মুঠোফোন ও পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাকে এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।