ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনকে সামনে রেখে আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন।
এদিন দুপুরে গুলশানে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তারেক রহমানের প্রত্যাশিত আগমন উপলক্ষ্যে জনগণের ভাবনা, আকাঙ্ক্ষা ও রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নকে তুলে ধরতেই বিএনপির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ জাতীয় রিল-মেকিং প্রতিযোগিতা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা নির্ধারণে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য।
ড. মাহাদী আমিন বলেন,“তারেক রহমান কেবল একটি রাজনৈতিক নাম নন, তিনি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতীক। তার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে আমরা চাই জনগণ নিজের ভাবনা, প্রত্যাশা ও প্রস্তাবগুলো সরাসরি তুলে ধরুক। ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ সেই সুযোগ তৈরি করে দেবে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা এক মিনিটের ভিডিও (রিল) তৈরি করে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজেদের ভাবনা তুলে ধরতে পারবেন। রিলগুলোতে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র, সুশাসন, প্রবাসীদের অধিকার, পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যু তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিযোগিতার জন্য নির্ধারিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে—
- কর্মসংস্থান ও অর্থনীতি
- শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন
- কৃষক ও কৃষি খাত
- স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা
- দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ
- প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার
- পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়ন
- ‘আমি যেমন দেশ চাই’ শীর্ষক ব্যক্তিগত ভাবনা

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত নিয়মাবলী তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারীরা Facebook, Instagram, YouTube অথবা TikTok— যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করতে পারবেন। প্রতিটি ভিডিওতে অবশ্যই #BangladeshFirst হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে হবে এবং নির্ধারিত লিংকের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
প্রতিযোগিতায় জমা দেওয়া ভিডিওগুলোর মধ্য থেকে বিচারক প্যানেলের মূল্যায়ন এবং জনভোটের ভিত্তিতে সেরা ভিডিও নির্বাচন করা হবে। বিজয়ী ১০ জন সরাসরি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতার সুযোগ পাবেন—যা এই প্রতিযোগিতার অন্যতম আকর্ষণ।
মাহাদী আমিন জানান, ৩০ শতাংশ নম্বর নির্ধারিত হবে জনভোটের ভিত্তিতে। ৭০ শতাংশ নম্বর আসবে বিচারক বোর্ডের মূল্যায়ন থেকে। বিজয়ীদের সনদ, সম্মাননা এবং বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হবে। পাশাপাশি নির্বাচিত রিলগুলো বিএনপির নীতিনির্ধারণী ভাবনায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, যে কার্যালয়ে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটি বিএনপির একটি নতুন অফিস, যা ভবিষ্যতে দলীয় ও সম্ভাব্য নির্বাচনি কার্যক্রমে ব্যবহৃত হবে। এতে বিএনপির সাংগঠনিক প্রস্তুতির একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে মাহাদী আমিন বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আমাদের স্বাধীনতার চেতনার দিন। আজকের দিনে তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে সামনে রেখে এই কর্মসূচি ঘোষণা একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার—যেখানে জনগণই হবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে রাষ্ট্র গঠনে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সম্ভব নয়।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে এই জাতীয় রিল প্রতিযোগিতা বিএনপির জন্য শুধু একটি সাংস্কৃতিক বা ডিজিটাল উদ্যোগ নয়; বরং এটি জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রোডম্যাপ তৈরির একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা হিসেবেও দেখছেন অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ও সাবেক সিনিয়র সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাবেক বিশ্ব ব্যাংক কর্মকর্তা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বিএনপি মিডিয়া সেল সদস্য ড. সাইমুন পারভেজ।