সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধের তৃতীয় বছরে এসে দেশটির কুরদুফান অঞ্চলে ড্রোন হামলায় অন্তত ১০৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিবদমান সামরিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে লড়াই চরম আকার ধারণ করায় এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরের শুরু থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত কুরদুফানের মধ্যাঞ্চলে এই হামলাগুলো চালানো হয়।
গত সপ্তাহে বাবনোসা এলাকায় অবস্থিত সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস’ (আরএসএফ) দখল করে নেওয়ার পর লড়াই আরও তীব্র হয়। মূলত যুদ্ধটি পশ্চিমের দারফুর থেকে এখন মধ্যাঞ্চলের বিশাল কুরদুফান এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এই সংঘাতের ফলে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং কলেরার মতো মহামারীতে আক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয়েছে দক্ষিণ কুরদুফানের কালোগি এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেন ও হাসপাতালে। সেখানে ৮৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪৩ জন শিশু এবং ৮ জন নারী রয়েছেন। জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক এই পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, চিকিৎসা স্থাপনায় হামলা চালানো আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
গত ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কুরদুফানের রাজধানী কাদুঙ্গলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ৬ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়ে কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’
ওই হামলার একদিন পর ডিলিং মিলিটারি হাসপাতালে হামলার ঘটনা ঘটে। সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, ওই হামলায় নয়জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছে। ‘হাসপাতালগুলোকে পরিকল্পিত লক্ষ্যবস্তু করা’ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।