ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা শঙ্কায় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে দলের প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আসেন সম্ভাব্য এই দুই প্রার্থী। এ সময় তারা এলাকার কর্মী ও সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ইসিতে অভিযোগ দেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
সিইসিকে দেওয়া লিখিত অভিযোগে কাজী রেহা কবির সিগমা বলেন, ‘আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন পক্ষপাতমুক্ত, সুষ্ঠু ও সবার জন্য নির্বিঘ্ন করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন অঙ্গীকারাদ্ধ। কিন্তু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বাধাগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে অবিলম্বে জড়িত ও দায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দেওয়ার আবেদন করছি।’
কাজী রেহা কবির সিগমা বলেন, ‘আমি কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছি। এরই মধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি। গণসংযোগের কাজে অনেক কর্মী-সমর্থক তৎপর হয়েছে। কিন্তু, গণসংযোগের সময় ত্রাস সৃষ্টি করে আমার কাজ দুরূহ করে তুলছে।’
তিনি সিইসিকে জানান, ১৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১টার দিকে তার এক নিরাপরাধ কর্মী মো. কিয়ামত আলীকে (৫০) গ্রেফতার করে ভুয়া মামলায় কিশোরগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে নির্বাচনি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, কিয়ামতের নামে কোনো মামলা বা অভিযোগ ছিল না। তাকে ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বরে করা একটি মামলায় আসামি দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ওই মামলায় তার কর্মী কিয়ামত আলী এজাহারভুক্ত আসামিও নয়।
সিগমা অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করে আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নাতীত ও সুষ্ঠু করার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সিইসিকে অনুরোধ জানান। পরে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ ভীতিকর সৃষ্টি করছে। আমার কর্মী ও আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই ইসি ও প্রশাসনের কাছে সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি।’
এদিকে, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যারিস্টার ফুয়াদ এসেছিলেন। তার অভিযোগ হচ্ছে, পুলিশ তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না। আমরা সার্বিকভাবে সব প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি।’ এ সময় তিনি সব প্রার্থী ও তাদের সমর্থনদের আচরণ বিধিমালা মেনে চলার আহ্বান জানান।