ঢাকা: সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান দেশটিতে চিকিৎসাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে দেখতে গিয়েছিলেন। বুধবার রাতে (১৭ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার রাত ৯ টা ৪০ মিনিটে ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করেন এবং হাদির চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন। তিনি জানান, হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে হাদির জন্য দোয়া ও প্রার্থনার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এদিকে, একইদিন সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ এক ভিডিও বার্তায় জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন এবং তার অবস্থা আপাতত অপরিবর্তিত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘হাদির চিকিৎসা সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালেই চলবে এবং আপাতত কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্ট অনুসরণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন তার বিভিন্ন ইনভেস্টিগেশন করা হচ্ছে। তবে সামগ্রিকভাবে শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।’
ডা. আহাদ জানান, ‘বর্তমানে ওসমান হাদির হার্ট, ফুসফুস ও কিডনি ভেন্টিলেশন সাপোর্টের মাধ্যমে কার্যক্রম চালাচ্ছে। ইউরিন আউটপুটও আগের মতোই সাপোর্টের মাধ্যমে বজায় রয়েছে। বুধবারও তার সিটিস্ক্যান করা হয়েছে- তার ব্রেনে যে ইস্কেমিয়া ছিল, তা কিছুটা বেড়েছে। তবে ব্রেনে থাকা গুলির একটি ছোট অংশ অপসারণে নতুন করে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হবে কি না এবং সে ক্ষেত্রে তাকে যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হবে কি না, এসব বিষয় নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘যে জায়গায় গুলির অংশটি রয়েছে, সেখানে অপারেশন করলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হতে পারে কি না, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পাশাপাশি তার শরীর এই মুহূর্তে দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল নিতে পারবে কি না, সেটিও চিকিৎসকেরা মূল্যায়ন করবেন। এ ক্ষেত্রে পরিবারের ইচ্ছার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।’
এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হওয়ায় তাকে গত সোমবার সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এই ঘটনায় প্রধান আসামি ফয়সালকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।