সিলেট: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান পাথারিয়া ছোটলেখা উচ্চ বিদ্যালয়ের (পিসি স্কুল) অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ (হামিদ স্যার) (৭৫) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা ২০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রীসহ দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ার এটিএম কায়ছার হামিদ কানাডার এরিকসন কোম্পানিতে কর্মরত ও মেয়ে ডাক্তার ফারজানা হামিদ কানাডার আলবার্টার একটি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত এবং ছোট ছেলে এবিএম আবছার হামিদ সিলেট নর্থ ইষ্ট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ (হামিদ স্যার) ১৯৫১ সালের ৭ এপ্রিল বড়লেখা উপজেলা পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত বারইগ্রামে (৩নং ওয়ার্ড) জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আব্দুল কাইয়ুম ও মাতা মরহুমা মোস্তফা বেগম। তার বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সিলেট এমসি কলেজ থেকে। বিএসসি ও চট্রগ্রাম টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড-এ প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি।
সর্বজন শ্রদ্ধেয় উদ্যমী আর প্রাণবন্ত এ মানুষটিকে বড়লেখাবাসী চেনে ‘হামিদ স্যার’ নামেই। তিনি সর্বমহলে এ নামেই পরিচিত।
মানুষ গড়ার কারিগর, ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে যিনি উপজেলার সর্বমহলে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের স্বীকৃতি পান।
তিনি শিক্ষকতা জীবনের ৩৬ বছর (তিন যুগ) সময় ধরে বড়লেখা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাথারিয়া ছোটলেখা (পিসি স্কুল) উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন। তার যোগ্য নেতৃত্ব, দক্ষতা ও পরিশ্রমের ফলেই পিসি স্কুল বর্তমানে জেলার অন্যতম বিদ্যালয়গুলোর একটি।
তিনি বহুসংখ্যক সামাজিক, সংষ্কৃতি ও শিক্ষামূলক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার হাতে গড়া অসংখ্য শিক্ষার্থী দেশে-বিদেশে উচ্চপদে কর্মরত রয়েছেন।
হামিদ স্যারের ছোট ছেলে আবছার হামিদ রিমন জানান, ‘গত মঙ্গলবার রাতে আব্বুর সঙ্গে ভালো-মন্দ কথা হয়েছে কিন্তু সকালে খবর পাই আব্বু আর নেই। মূলতঃ বার্ধক্যজনিত কারণে আব্বুর মৃত্যু হয়।’ শুক্রবার মিশিগানে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরবর্তী জানাযা ও পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের জন্য মরদেহ দেশে আনার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।