ঢাকা: রাজধানীর পল্লবী থানাধীন পুরান সিটি মার্কেট (আলুপট্টি) এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ‘বোমা কাল্লু’ ও ‘লেংড়া রুবেল’র খোঁজে অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এসময় তারা পালিয়ে গেলেও ভবনটি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর ৮৬ স্বতন্ত্র সিগন্যাল বিগ্রেডের আর্মি ক্যাম্প থেকে মেজর হিমেল এ তথ্য জানিয়েছেন।
সেনাবাহিনী জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে মিরপুরের পল্লবী থানাধীন পুরান সিটি মার্কেট (আলুপট্টি) এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনে অভিযান চালায়। কুখ্যাত সন্ত্রাসী ‘বোমা কাল্লু’ এবং ‘লেংড়া রুবেল’ তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে উক্ত পরিত্যক্ত ভবনে একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্যে অস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা করছিল এমন খবরে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন দুষ্কৃতকারী পেছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। ভবনটি একটি ফুটবল মাঠের চেয়েও বড় এবং সেখানে পৌঁছানোর জন্য সুগম কোনো রাস্তা না থাকায় এবং অপরাধীদের নিজস্ব তথ্যদাতা থাকায় সরাসরি তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এসময় পরিত্যক্ত ভবনটি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ আংশিক উদ্ধার করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী আরও জানায়, এই বিশাল পরিত্যক্ত ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রধান আস্তানায় পরিণত হয়েছে। মাঝেমধ্যেই এই ভবনের ভেতর থেকে ককটেল বিস্ফোরণ এবং গোলাবর্ষনের শব্দ পাওয়া যেত। ইতিপূর্বে ওই স্থান থেকে মরদেহও উদ্ধার করা হয়েছে। মূলত সন্ত্রাসী বোমা কাল্লু এবং লেংড়া রুবেল নিয়মিতভাবে তাদের সঙ্গীদের নিয়ে এখানে একত্রিত হতো।
মেজর হিমেল জানান, বোমা কাল্লু এবং লেংড়া রুবেলের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বোমা কাল্লু পূর্বে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়ে শ্যামলীর ডক্টরস কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এই পরিত্যক্ত ভবনটি তারা মূলত ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করত। বোমা কাল্লু মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের অনেক অপরাধীর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখে।
অন্যদিকে, লেংড়া রুবেল আলুপট্টি সংলগ্ন বিহারি ক্যাম্পগুলোতে নিজস্ব আধিপত্য বজায় রেখে আসছিল। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে ধারণা।
তিনি জানান, অভিযানের সময় তিনটি রিভলভার এবং একটি রিভলভার কভার, ৭৩ রাউন্ড তাজা গুলি, একটি চাপাতি এবং দুটি ছুরি, ৩০ গ্রাম গান পাউডার এবং ককটেল তৈরির সরঞ্জাম (সুতা), একটি বিস্ফোরিত ইম্প্রোভাইজড ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা মালামাল সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং পলাতক সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।