ঢাকা: মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত মানদণ্ডের বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।
রুলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের গত ১৮ নভেম্বর জারি করা মানদণ্ড-সংবলিত বিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
রিটকারীদের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আতিকুর রহমান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।
ব্যারিস্টার আতিকুর রহমান বলেন, নির্ধারিত মানদণ্ডের কারণে একটি বিশেষ গোষ্ঠী মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুযোগ পাবে, যা বাজারে মনোপলি তৈরি করবে। এতে সাধারণ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কার্যত বাদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর ‘মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের নতুন সুযোগ: বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া’ শিরোনামে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এতে মোট ১০টি মানদণ্ড উল্লেখ করা হয়।
মানদণ্ড অনুযায়ী, রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স প্রাপ্তির পর কমপক্ষে পাঁচ বছর সন্তোষজনকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। পাশাপাশি গত পাঁচ বছরে বিদেশে অন্তত তিন হাজার কর্মী পাঠানোর প্রমাণ এবং কমপক্ষে তিনটি ভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণ ও কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এ ছাড়া প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন, নিয়োগ ও বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের বৈধ লাইসেন্স এবং কর্মী গ্রহণকারী দেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সদাচরণের সনদ থাকতে হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এই মানদণ্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মেসার্স আফিয়া ওভারসিজসহ তিনটি রিক্রুটিং এজেন্সি গত মাসে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটকারীদের আইনজীবী জানান, এসব শর্তের কারণে সাধারণ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুযোগ সীমিত হয়ে যাবে, যা আপিল বিভাগের পূর্ববর্তী রায় ও প্রতিযোগিতা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জারি করা একটি সার্কুলারে এমন কিছু শর্ত যুক্ত করা হয়েছে—যেমন ১০ হাজার বর্গফুট অফিস থাকা কিংবা বিপুল সংখ্যক কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা—যেগুলো অনেক ক্ষেত্রে অবাস্তব ও অসম্ভব। এসব মানদণ্ড মূলত বড় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষায় প্রভাবিত হয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।