পিরোজপুর: শহিদ ওসমান হাদির মৃত্যুতে ঘোষিত জাতীয় শোক দিবসে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্ধারিত সময়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না হওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন ঘটনাটিকে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ হিসেবে ব্যাখ্যা দিলেও স্থানীয় ছাত্রসমাজ ও সচেতন মহলের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় শোক দিবসে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধান থাকলেও পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুপুর পর্যন্ত পতাকা উত্তোলন করা হয়নি।
এবিষয়ে জানতে গণমাধ্যমকর্মীরা দুপুর ২টা ১৪ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গেলে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী মো. পারভেজ ইসলাম জানান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে তিনি কোনো নির্দেশনা পাননি এবং বিষয়টি সম্পর্কে তার কিছুই জানা নেই।
পরে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক (ফিনান্স) আরাফাত হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভুলবশতঃ নিরাপত্তা কর্মীরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেননি। এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল।’
তবে প্রশাসনের এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও ছাত্রসমাজ। পিরোজপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন তালুকদার কুমার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব নাম ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ হওয়া এবং সাম্প্রতিক শহিদ ওসমান হাদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শোক পালনের বিষয়ে প্রশাসনের অনীহাই এ ঘটনার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে।
তারা আরও বলেন, জাতীয় শোক দিবস কোনো সাধারণ দিবস নয়— এটি রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এদিন একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনে এমন অবহেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিকে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে তড়িঘড়ি করে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
জাতীয় শোক দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব পালনের বিষয়টিকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এ ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত এবং দায়ীদের বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।