চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী নবাবগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় (টাউন হাইস্কুল)-এর ৯০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে রোববার (২১ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় সারাদিন মুখর ছিল বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, গম্ভীরা গান, সম্মাননা প্রদান, স্মৃতিচারণ, আতশবাজি ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ৯০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সদস্য মিঞা মো. আলী আকবর আজিজী ৯০ বছরপূর্তি উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উদ্বোধনের পর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
শোভাযাত্রা শেষে আলোচনা সভায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মিঞা মো. আলী আকবর আজিজী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রাজশাহীর অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. আনিসুর রহমান, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুলতানা রাজিয়া, আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাহারুল ইসলাম, নবাবগঞ্জ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া, বিশিষ্ট সমাজসেবী শফিকুল আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আমানুল হক এবং পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল ওদুদ হকসহ অন্যান্যরা।

বক্তারা বলেন, ১৯৩৫ সালে বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখার যাত্রা শুরু হয়ে আজকের নবাবগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দফতরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে তারা দেশসেবায় অবদান রেখে চলেছেন। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানস্থলে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের তিন প্রজন্মের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। এসএসসি ১৯৬৬ সালের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও জেলার বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ইসরাইল সেন্টু তার ছেলে মাহবুবুল ইসলাম ও নাতি রুদ্র ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইসরাইল সেন্টু জানান, বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই ছেলে ও নাতিকে এখানেই ভর্তি করিয়েছেন। তিন প্রজন্ম একসঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে তিনি আনন্দিত।
এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী দিনাজপুর ভেটেরিনারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঈনুদ্দিন আহমেদ ঢাকা থেকে তার সহপাঠী সড়ক ও জনপথ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আতিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে এসে ভালো লাগলেও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মঞ্চে না ডাকার বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি আরও জানান, তিনি ও তার সহপাঠী বিদ্যুৎ কান্তি ছিলেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নবাবগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রথম দুজন শিক্ষার্থী।