ঢাকা: চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে কারফিউ জারি করে গণহত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে প্রসিকিউশনের শুনানি শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের শুনানির জন্য আগামী ৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে তিনি সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের ব্যক্তিগত দায় তুলে ধরেন। এ সময় তাদের মধ্যকার একটি ফোনালাপ ট্রাইব্যুনালে বাজিয়ে শোনানো হয়। পরে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পৃথকভাবে উপস্থাপন করে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন জানান তিনি।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষে শুনানির জন্য অতিরিক্ত সময় চান সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। তিনি জানান, আগামী ৪ জানুয়ারি সালমান ও আনিসুলের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করবেন। ট্রাইব্যুনাল তার আবেদনে সাড়া দিয়ে ওই দিন নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল ১৭ ডিসেম্বর। তবে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি পিছিয়ে ২২ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া আসামিপক্ষ থেকে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি চেয়ে ১০ ডিসেম্বর আবেদন করা হয়েছিল।
এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ আমলে নেন।
প্রসিকিউশনের অভিযোগ অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সালমান ও আনিসুলের মধ্যে হওয়া ফোনালাপে কারফিউ চলাকালে আন্দোলনকারীদের ‘শেষ করে দেওয়ার’ কথা বলা হয়। তাদের এই বক্তব্যের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়, যা হত্যাকাণ্ডে উসকানি হিসেবে কাজ করেছে বলে দাবি করা হয়।
২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট পালানোর সময় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে তারা হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ একাধিক মামলায় কারাগারে রয়েছেন।