ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ) আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ ছিল বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার। তবে জোটগত আসন সমঝোতার কারণে বিএনপি এই আসনটি ছেড়ে দিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থীরা যেসব আসনে নির্বাচন করবেন, সেসব আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না। এ সময় তিনি জনগণকে খেজুর গাছ প্রতীকে ভোট দিয়ে ধানের শীষকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার সম্ভাব্য মনোনয়ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। গত ৩ নভেম্বর বিএনপি ২৩৭ আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেও ওই তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এরপর থেকেই স্থানীয় নেতাকর্মীরা ধারণা করেন, জোটের শরিক হিসেবে এই আসনে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে প্রার্থী করা হবে।
তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যান রুমিন ফারহানা। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তিনি মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর বাজারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত দোয়া ও মতবিনিময় সভায় রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমি যা বলি, তাই করি। ভালো হোক বা মন্দ হোক— এটার দায় আমার। আপনারা যদি আমার পাশে থাকেন, মার্কা যা-ই হোক, আমি সরাইল-আশুগঞ্জ থেকেই নির্বাচন করবো।’
মঙ্গলবার জোটের পক্ষ থেকে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে প্রার্থী ঘোষণা করার পর রুমিন ফারহানার সমর্থকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, দলের পক্ষ থেকে রুমিন ফারহানার অবদান ও জনপ্রিয়তার যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি।
রুমিন ফারহানার একনিষ্ঠ সমর্থক আয়াত উল্লাহ বলেন, ‘এলাকার উন্নয়নের জন্য আমরা আশা করেছিলাম বিএনপি রুমিন আপাকে মনোনয়ন দেবে। দলের সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করতে চাই।’
অন্যদিকে, সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই কাজ করবো। দলের বাইরে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারিনি— দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’