কাবার মেহমানদের পদচারণায় মুখর হজ ক্যাম্প
১৬ জুলাই ২০১৮ ০৮:৩২
।। মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর আশকোনা এলাকা এখন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর। দিন-রাত কাবার মেহমানদের সেবা দিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্যাম্পের প্রতিটি কর্মী। হজ গমনেচ্ছুরা যেন সেবা বঞ্চিত হয়ে বিড়ম্বনায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট।
কর্তৃপক্ষ বলছে, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার তাদের কার্যক্রম অনেক বেশি সুশৃঙ্খল। নেওয়া হয়েছে বাড়তি উদ্যোগ। যে কারণে ঝামেলামুক্ত হচ্ছে হজযাত্রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, হজ গমনেচ্ছুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আশাকোনার হজ ক্যাম্পের মূল ফটকে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে। মোতায়েন করা হয়েছে শতাধিক আর্মড পুলিশ, পুলিশ ও আনসার সদস্য। মূল ফটকের পাশেই রয়েছে পুলিশের অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম। আর শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন বাংলাদেশ রোভার স্কাউটের প্রতিনিধিরা। ক্যাম্পের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকেই স্কাউটস সেবা ঘর।
ক্যাম্পে এসে রিপোর্ট করার পর ক্যাম্পের ডরমেটরিতে বিশ্রাম নিচ্ছেন অনেকে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে যাত্রী ছাড়া কাউকে ক্যাম্পের ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ক্যাম্পের পৌঁছালে অভ্যর্থনা, আবাসস্থলে পৌঁছে দেওয়া, স্বাস্থ্যসেবা, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে সহায়তা, তথ্যকেন্দ্রে সহায়তা, স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ রোভার স্কাউট। যাত্রীরাও ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ময়মনসিংহ থেকে এসেছেন আব্দুল মোতালেব। তিনি বলেন, এখানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। যেখানে যা লাগছে, সহায়তা পাচ্ছি। সন্তুষ্টি জানান সিলেট থেকে আসা মকলিস আলী, তার স্ত্রী এবং ছেলে।
হজ ক্যাম্পের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দেশের দূরদূরান্ত থেকে যেসব যাত্রী আসছেন তাদের যেকোনো ধরনের সেবার জন্য আমাদের ব্যবস্থা রয়েছে। ৪০ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবী দল দিন-রাত কাজ করছে। সেবা নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্যের বাইরেও অন্যান্য তথ্য সেবা দিচ্ছে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ। সেখানে দায়িত্বরত শহিদুল আরেফিন জানান, হজের নিয়ম-কানুন, স্থান পরিচিতি কিংবা পরিবহন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তথ্য দেওয়া হচ্ছে। সেখানে সেবা নিতে আসা খুলনার মুজিবুর রহমান জানান, হজ সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছেন তিনি।
হজ ক্যাম্প পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, ১৪ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত হজ ফ্লাইট চলবে। সে পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মুসল্লি ক্যাম্পে অবস্থান করবেন। একজন যাত্রীকে ফ্লাইট পেতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি মাথায় রেখেই সারাদেশ থেকে মুসল্লিদের পর্যায়ক্রমে ক্যাম্পে আনা হচ্ছে।
‘বিভিন্ন জেলা থেকে দীর্ঘ যাত্রা শেষে ঢাকায় আসতে গিয়ে অনেকেই অসুস্থ বোধ করছেন। তারা ক্যাম্পে এসে বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন। তারপর বিমানে উঠছেন। ক্যাম্পে হজ বিষয়ে প্রশিক্ষিণ দেওয়া হচ্ছে।’, জানান তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬ হাজার ৭৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজারসহ মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন বাংলাদেশি হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এরই মধ্যে ১৪ জুলাই বাংলাদেশ থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট পৌঁছেছে সৌদি আরবে।
সারাবাংলা/এটি