জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ‘এ’ ইউনিটের বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে উপাচার্যের কক্ষ পরিদর্শনের সময় সাংবাদিক প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে এক সাংবাদিককে হেনস্তা, প্রশ্নফাঁসকারী বলে লাঞ্ছিত করা এবং পরবর্তীতে উপাচার্যের কক্ষে ডেকে নিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালামের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে গণিত বিভাগের ১১৯ নম্বর কক্ষে উপাচার্যের পরিদর্শনের সময় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক হলেন অনুপম মল্লিক আদিত্য। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংবাদ প্রকাশের প্রয়োজনে ছবি সংগ্রহ করতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধি অনুপম মল্লিক আদিত্যসহ আরও দুইজন সাংবাদিক উপাচার্যের সঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক, একজন ক্যামেরাম্যান এবং আরও দুইজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় অনুপম মল্লিক আদিত্য কক্ষের ছবি তুলতে গেলে জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালাম তার ওপর চড়াও হন এবং প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তুলে তাকে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
পরবর্তীতে ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালাম সাংবাদিক অনুপম মল্লিক আদিত্যকে উপাচার্যের কক্ষে ডেকে নেন। সেখানে উপাচার্য ওই সাংবাদিককে আনওয়ারুস সালামের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন উপাচার্য।
এ সময় ভুক্তভোগী সাংবাদিক উপাচার্যকে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র আমার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলাম। আর পিআরও দপ্তর যদি সঠিক সময়ে আপডেট দিত, তাহলে সাংবাদিকদের সেখানে যেতে হতো না। শুধুমাত্র ছবি তোলার কারণে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক যখন আমাকে ‘প্রশ্নফাঁসকারী’ ট্যাগ দেন, তখন তাঁর দায়িত্ববোধ নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক অনুপম মল্লিক আদিত্য বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের প্রয়োজনে পরীক্ষা হলের ভেতরের পরিবেশ দেখানোর জন্য তার দুটি ছবি প্রয়োজন ছিল। তাই প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ভিড় এড়াতে শুধুমাত্র তিনিই সেখানে যান। তবে গিয়ে তিনি দেখেন, তার পাশাপাশি অন্যান্য সাংবাদিকরাও ছবি তুলছেন। এছাড়া বিএনসিসির সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক হলের ভেতরে অবস্থান করছিলেন, যেখানে তাদের দায়িত্ব হলের ভেতরে নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পিআরও পরিচালক আমাকে ‘প্রশ্নফাঁস করছি’ বলে অভিযোগ তুলে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। স্বয়ং উপাচার্য স্যারের সামনেই এমন ঘটনায় আমি মর্মাহত।”
এ সময় জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালাম সাংবাদিককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তুমি যদি জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী হতে, তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। প্রফেশনালিজম বুঝতে।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘তাকে (আদিত্য) পিআরও পরিচালকের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে আমরা আমাদের মতো করে ব্যবস্থা নেব।’