বগুড়া: কেউ চলকলেট খাচ্ছিলেন, কেউবা আবার করছিলেন খুনসুটি। কেউবা ফিরে গিয়েছিলেন সেই পুরোনো দিনের স্মৃতিতে। হারানো সেই দিনগুলো গল্প নিয়ে পসরা বিছিয়েছিলেন পঞ্চাশোর্দ্ধ প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। তাদের মুখে ছিল শুধুই পুরোনো দিনের গল্প। কেউ কেউ আবার তাদের শ্রেণীকক্ষে বসে সেলফি তুলছিলেন। পুরো মাঠজুড়ে প্রাণের মিলনমেলা জমে উঠেছিল সংসারের নানা গল্প নিয়ে। এভাবেই হাসি-কান্নায় কেটে যায় সারাদিন। তাদের এই মিলনমেলায় যোগ দিয়েছিলেন গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ। শুধু প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই নয় বর্তমানে অধ্যানয়রত শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়েছেন এই শতবর্ষপূর্তিতে। অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও আনন্দে মাতিয়ে তুলেছেন প্রতিষ্ঠানপ্রাঙ্গন। গানে গানে মুখরিত হয়েছিল শিহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাকজমকপূর্ণ এমন শতবর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠান এলাকাবাসীর মন কেড়েছে।
শতবর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আয়োজনে শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী সানাউল হক ডিউয়ের সভাপতিত্বে বিদ্যালয় চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অত্র এলাকার কৃতিসন্তান ও আনন্দ গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহেল বারী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি শত বছর ধরে ভালো মানুষ গড়ার অবদান রেখে যাচ্ছে। পাশাপাশি এলাকাটি শিক্ষানগরী এলাকায় পরিণত করতে স্থানীয় সৈয়দ আহম্মদ পরিবারটি ভুমিকা রাখছে। আমরা দান করা শিখব। তাদের মতো আমরা দান করে উদাহরণ সৃষ্টি করব। একসময় এই শিহিপুর এলাকাটি শহরে পরিণত হবে।
তিনি আরও বলেন, এই বিদ্যালয় থেকে অনেকে শিক্ষালাভ করে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত আছেন। বিদ্যালয়টি বরাবরই ভালো ফলাফল অর্জন করে আসছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আনন্দ গ্রুপের পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ নাজমা নওরোজ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেজোয়ান হোসেন, লেফটেনেন্ট কর্ণেল (অব.) আব্দুর রহমান, দিগদাইড় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শহিদুল হক টুল্লু, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী হাফেজ মাওলানা ইঞ্জিনিয়ার নাসিদুল হক মাসনবী, ডা. লতিফুল বারী শাকিল, বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক, আব্দুল হাই নারেছ, প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব ফজলুল করিম মুঞ্জিল, অ্যাড. হালিমুর রশিদ লিটন, ডা. মো. সামিউল হক, অধ্যাপক ডা. মো. শফিউল হক, সানাউল হক, ডা. নওরোজ অনন্যা, সৈয়দ আহম্মদ কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুঞ্জুরে আলম রাসেল, পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজাউল কবির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের মাঝে ক্রেস্ট বিতরন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শেষে আমিজা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সাবেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাঝে ক্রেস্ট, নগদ অর্থ ও সার্টিফিকেট বিতরন করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।