ঢাকা: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজও সাক্ষ্য দেবেন তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তিনি বেরোবির সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেবেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আজ তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দির শুরুতেই মামলার আসামিদের ব্যক্তিগত দায় তুলে ধরবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেবেন তিনি। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) তার সাক্ষ্যে ১৬ জন আসামির সংশ্লিষ্টতার বিষয় ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থাপন করা হয়। অবশিষ্ট আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য আজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। মামলায় ২৫ নম্বর সাক্ষী হিসেবে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হচ্ছে।
তদন্তকালে কোথা থেকে কবে এবং কীভাবে আলামত জব্দ করা হয়েছে-সব বিষয়ই নিজের জবানবন্দিতে তুলে ধরছেন তদন্ত কর্মকর্তা। গত ১৮ ডিসেম্বর তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য শেষ হলে গ্রেফতার ও পলাতক আসামিদের আইনজীবীরা তাকে জেরা করবেন।
এর আগে, ১০ ডিসেম্বর বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা জবানবন্দি দেন। একই দিনে তদন্ত সংস্থার রেকর্ড সংরক্ষণকারী এসআই মো. কামরুল হোসেনের জবানবন্দিও রেকর্ড করা হয়। এ পর্যন্ত মামলায় মোট ২৫ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।
৯ ডিসেম্বর ২২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন এবং সমন্বয়কদের আটকে রাখার জন্য ব্যবহৃত একটি নতুন সেইফ হাউজের তথ্য জানান। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সময় টিভি, ডিবিসি ও ৭১ টিভিসহ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করেন তিনি।
মামলায় গ্রেফতার ছয় আসামি হলেন-এ এস আই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
চলতি বছরের ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর আগে, ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বর্তমানে সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন আসামি পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ মামলায় ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় এবং ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। মোট সাক্ষীর সংখ্যা ৬২ জন।