নিরাময় অযোগ্য রোগীদের জন্য ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জে’র যাত্রা শুরু
১৮ জুলাই ২০১৮ ২০:৪৯
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ প্রকল্পের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে সম্প্রসারিত হলো প্যালিয়েটিভ কেয়ার সেবা প্রদান। এর ফলে এই প্রথম ঢাকা শহরের বাইরে কোনো এলাকায় প্যালিয়েটিভ কেয়ার সেবা, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের প্যালিয়েটিভ সেবার কার্যক্রম যাত্রা শুরু করলো।
নিরাময় অযোগ্য এবং আয়ু কমিয়ে দেওয়া রোগে আক্রান্তদের জীবনের শেষ সময়টুকু ভোগান্তি-যন্ত্রণা-বেদনাহীন ও নিরাপদ করার জন্য সমন্বিত সেবাব্যবস্থাকে বলা হয় প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা উপশমকারী পরিচর্যা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুধবার (১৮ জুলাই) বিএসএমএমইউ ও ওয়ার্ল্ডওয়াইড হসপিস প্যালিয়েটিভ কেয়ার অ্যালায়েন্সের যৌথ উদ্যোগে তিন বছর মেয়াদি সেবা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’। প্রকল্পটির অর্থায়নে রয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউকেএইড।
নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। তিনি বলেন, ৭২.৪৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২২ লাখ মানুষের মধ্যে সাড়ে সাত থেকে আট হাজার মানুষের প্রত্যক্ষভাবে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন। পরোক্ষভাবে রোগীর পরিবারও এই সেবার আওতায় আসতে পারে। ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্ল্ডওয়াইড হসপিস প্যালিয়েটিভ কেয়ার এলায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক ডা. স্টিফেন আর কনর সংগঠনের কার্যক্রম, প্যালিয়েটিভ সেবার প্রয়োজনীয়তা ও বিশ্বে প্যালিয়েটিভ সেবার পরিস্থিতির বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, ৬৪টি জেলাতেই প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা সেবার সুযোগ থাকা উচিত। আর শুধু প্যালিয়েটিভ নয়, হার্ট ও কিডনির জটিল রোগ এবং নবজাতকসহ শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রেও উন্নত ও আধুনিক সেবা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’
অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, অতি সম্প্রতি প্রকাশিত ল্যানসেট কমিশন রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ছয় কোটিরও বেশি মানুষের প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তাদের শতকরা ৯০ ভাগই এই সেবা পেতে ব্যর্থ হয়ে ব্যথা-বেদনা ও ভোগান্তিসহ মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে।
সারাবাংলা/জেএ/টিআর