যৌন হয়রানির অভিযোগ: শিক্ষক বরখাস্ত, প্রক্টরকে অব্যহতি
১৮ জুলাই ২০১৮ ২১:৪১
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
ময়মনসিংহ: ত্রিশালে যৌন হয়রানি ও উত্যক্ত করার অভিযোগে নাট্যকলা ও পরিবেশন বিদ্যা বিভাগের শিক্ষক রুহুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের শিক্ষিকা ও বিভাগীয় প্রধান ইসমত আরা ভুইয়া ইলা এবং আরো দুই শিক্ষিকা তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও উত্যক্ত করার আনেন।
লিখিত অভিযোগ করার পর বুধবার সকালে উপাচার্য স্বাক্ষরিত এক নোটিশে শিক্ষক রুহুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি জানানো হয়। একইসঙ্গে অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অন্যদিকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহিদুল কবীরকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।
কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হককে। সদস্য করা হয়েছে কৃষি বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. একেএম জাকির হোসেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবা কানিছ কেয়াকে।
কমিটিকে আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশন বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমিন গত চার বছর ধরে নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার একাডেমিক কমিটির সভা শেষ হওয়ার পর রুহুল আমিন বিভাগীয় প্রধানকে চোখ টিপ দিলে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন এবং এর আগেও তাকে বিভিন্ন সময় এসএমএস-এ, মেসেঞ্জারে বাজে ছবি পাঠায়েছেন ও নানাভাবে হয়রানি করেছেন বলে তিনি জানান।
একই বিভাগের আরো দুই শিক্ষিকা জানান, তাদেরও উত্যক্ত করে আসছিল রুহুল আমিন। সাবেক ভিসি মোহিত উল আলমের কাছে তারা মৌখিক অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু রুহুল আমিন সংযত হননি।
এ ব্যাপারে নাট্যকলা ও পরিবেশন বিদ্যা বিভাগের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকারা জানান, অভিযুক্ত রুহুল আমিন বিভিন্ন সময় চুল ধরে টান দিতেন, আপত্তিকর কথা বলতেন। মান-সম্মানের ভয়ে এতদিন মুখ খোলা হয়নি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রুহুল আমিন জানান, ভালো রেজাল্ট করেছে এমন শিক্ষার্থীদের মাস্টার্সে ফেল করিয়ে দিয়ে তাদের শিক্ষাজীবন ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন বিভাগীয় প্রধানসহ কিছু শিক্ষক ও শিক্ষিকা। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে এরকম জঘন্য মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এসব প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে প্রক্টর জাহিদুল কবীর জানান, আমাকে কী কারণে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে আমি ঘটনা শোনার পরপরই ভুক্তভোগীদের বাসায় গিয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
এই প্রসঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নারী শিক্ষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর প্রক্টর জাহিদুল কবীরের বিরুদ্ধে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন কয়েকজন শিক্ষক। সেই কারণে তাকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/জেএ/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook