চবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে ‘ছাত্রলীগের’ হামলা
১৯ জুলাই ২০১৮ ১৯:২১
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্রলীগের হুমকির মুখে থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই শিক্ষকের পক্ষে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী। এতে কর্মসূচি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ক্যাম্পাসে হামলার শিকার হয়েছেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরাও।
হামলার শিকার সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন।
কোটা সংস্কার ইস্যুতে দুই শিক্ষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চান বলে অভিযোগ করে তাদের চাকুরিচ্যুতি চেয়ে গত মঙ্গলবার উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন ছাত্রলীগের এক নেতা। দুই শিক্ষক হলেন- যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী আর রাজী এবং সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম। ছাত্রলীগ তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিতও ঘোষণা করে।
এর প্রতিবাদে বুধবার (১৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিলেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এতে যোগ দেন শিক্ষকরাও।
মানববন্ধনে দাঁড়ানো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো.হানিফ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, মানববন্ধন শুরুর পর কয়েকজনকে দেখলাম সেখানে এসে উগ্র আচরণ শুরু করেছেন। তারা প্রথমে ব্যানার কেড়ে নিয়ে গেলেন। শিক্ষকদের সঙ্গেও ধৃষ্ঠতা দেখালেন। এই অবস্থায় মানববন্ধন অব্যাহত রাখার পরিবেশ ছিল না। শুধুমাত্র একজন শিক্ষক রাহমান নাসির উদ্দিন স্যার বক্তব্য রাখতে পেরেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার মুখে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ স্থানে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও বেশ কয়েকজন যুবক ফের অনুষদের ভেতরে গিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। এসময় উপস্থিত শিক্ষকরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
এদিকে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীদের ধাওয়র ঘটনা ঘটেছে ।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ধীষণ কুমার চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, মানববন্ধনে হামলার পর আমরা ৮-১০ জন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মী কলা ফ্যাকাল্টি থেকে বেরিয়ে লাইব্রেরি ভবনের সামনে গেলে সেখানে ছাত্রলীগের কয়েকজন সন্ত্রাসী লাঠিসোঠা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি প্রক্টরকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
মানববন্ধনে বাধা দেওয়া ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আলমগীর টিপু।
টিপু সারাবাংলাকে বলেন, ছাত্রলীগের কেউ হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। কারা করেছে সেটাও আমরা জানি না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.আলী আজগর চৌধুরী বলেছেন, মানববন্ধনের আগে-পরের কোনোৃ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়নি।
সারাবাংলা/আরডি/একে
আরও পড়ুন
ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে চার ঘণ্টা দোকান-পাট বন্ধ