কোটা বাতিলের দাবি প্রথম করেছিল জামায়াত: হানিফ
২০ জুলাই ২০১৮ ২০:১৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: কোটা বাতিলের দাবি প্রথম জামায়াতে ইসলামী করেছিল বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের দাবি করেছিল। এটা হয়ত অনেকে ভুলে গিয়েছেন।’
শুক্রবার (২০ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনা সফল করার প্রস্তুতি উপলক্ষে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত বিশেষ প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত এবং মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণে শনিবার (২১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরকার পরিচালনায় প্রতি পদে পদে ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র এখনো আছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন হঠাৎ করে কেন এতো বিস্ফোরণের মতো চলে এলো, কারা এর পেছেনে আছে, এটা কাদের মনের দাবি? যারা এই কোটা সংস্কারের দাবি করছেন, তাদের দাবিটা কি? তারা সংস্কার চান, কোন কোন জায়গায় কতটুকু, কি চান সেটা পরিষ্কার করে বলে না, কোথায় তারা সংস্কার চান? সেই কথা কিন্তু তারা পরিষ্কারভাবে বলে না। আপনি যেটাই করে দেবেন এরা বলবে যে, আমরা এভাবে চাই না, আমরা মানি না।’
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত আলোচনায় জাতীয় সংসদে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের দাবি করে বক্তব্য রেখেছিলেন। সেটা সংসদে সংরক্ষিত আছে। ২০০৩ সারে বাজেট সেশনের উপর আলোচনার সময়ও যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদীও মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের দাবি করেছিলেন।’
চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিটা হঠাৎ করে নতুন করে শিক্ষার্থীদের মাথায় আসে নাই উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘এটা ২০০১ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর দাবি। সেটা তারা পূর্বে বাস্তবায়ন করে নাই কিন্তু এখন সুপরিকল্পিতভাবে ছাত্রদের উসকে দিয়ে কৌশলে কোটা সংস্কার নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তাদের ফায়দা চরিতার্থ করতে চায়। তাই এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি বা নতুন করে কথাবার্তা বলার প্রয়োজন নেই।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের বিষয়টি উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘আপনারা অপেক্ষা করুন, দেখেন উচ্চ পর্যায়ের কমিটি কি সিদ্ধান্ত দেন। আমরা মনে করি তা যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত হবে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে তারেক রহমানের টেলিফোন আলাপ ফাঁস হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে হানিফ বলেন, ‘এই সবগুলোই প্রমাণ করে, এটা শুধু ছাত্রদের নয়, ছাত্রদের কাঁধে ভর করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য একাত্তরের পরাজিত শক্তিদের ষড়যন্ত্রের একটি অংশ হিসেবে চলছে।’
মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, মোর্শেদ কামাল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ‘যুবলীগ ভোটকেন্দ্র পাহারা দিয়ে ঢাকায় দুই জন মেয়র দিয়েছে’
সারাবাংলা/এনআর/এমও