গুপ্তধন উদ্ধার অভিযান স্থগিত, আবার শুরু হবে রোববার
২১ জুলাই ২০১৮ ১৭:১৬ | আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ১৯:৫৪
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর ১০-এর একটি বাড়িতে গুপ্তধন আছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে জেলা নির্বাহী মেজিস্ট্রেটের সহযোগিতায় মিরপুর থানা পুলিশ সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে কোনো কিছু না পাওয়ায় আজকের মতো অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন।
আগামীকাল (২২ জুলাই) বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী আবারও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাহী মেজিস্ট্রেট আনোয়ারুজ্জামান।
গুপ্তধনের খোঁজে মিরপুরে একটি বাসায় পুলিশের অভিযান
তিনি বলেন, ‘বাড়িটির দুটি রুমের প্রায় চার ফুটের মতো নিচের দিকের মাটি খনন করা হয়েছে কিন্তু কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া খনন করতে গিয়ে বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় আজকে উদ্ধার কাজ স্থগিত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আগামী কাল থেকে ফের এ উদ্ধার কাজ চলবে।’
শনিবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সি ব্লকের ১৬ রোডের ১৬ নাম্বার বাড়িতে ২০ জন শ্রমিক নিয়ে গুপ্তধন উদ্ধার কাজ চালায় পুলিশ। এরপর বিকেল তিনটার দিকে দুপুরের খাবারের জন্য কাজের বিরতি দেওয়া হয়। তার কিছুক্ষণ পর বিকেল পৌনে চারটার দিকে মিরপুর থানার ওসির উপস্থিতিতে জেলা নির্বাহী মেজিস্ট্রেট এ স্থগিতের ঘোষণা দেন।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির বলেন, ‘তৈয়ব অভিযোগে নয়, বর্তমান বাড়ির মালিক মনিরুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা গুপ্তধন উদ্ধার কাজ শুরু করেছি। একতলা পুরোনো বাড়িটি ঝুকিপূর্ণ মনে হওয়ায় উদ্ধার কাজের স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।’
‘যেহেতু প্রায় সাড়ে চার ফুট খননের পরও কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তাই এবাড়িতে কোনো গুপ্তধন আছে কিনা সেটি আরও নিশ্চিত হতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে আগামীকাল আবারও উদ্ধার কাজ চালানো হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত এ বাড়িটি পুলিশের নিরাপত্তায় থাকবে বলে জানান তিনি। এরপরো যদি কোনো কিছু না পাওয়া যায় তাহলে কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করে পুলিশি নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি টেকনাফের তৈয়ব নামে এক ব্যক্তি মিরপুর থানায় অভিযোগ করেন, ওই বাড়িতে বহুবছর আগে তার আত্মীয়রা প্রায় ২ মণ স্বর্ণংলঙ্কার মাটিতে পুতিয়ে রেখে পাকিস্তান চলে গেছে। সম্প্রতি সে পাকিস্তান বেড়াতে গিয়ে এমন তথ্য পায় বলে জানায় থানাকে। এরপর তৈয়ব স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টিকে নিয়ে গুঞ্জন ছড়ায়। এতে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। এক পর্যায়ে গত ১২ জুলাই রাত ১১টার দিকে গুপ্তধন উদ্ধারের জন্য চারজন যুবক ও ১জন মহিলা ওই বাড়িতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। কিন্তু বাড়িটির কেয়ারটেকারের কারণে প্রবেশ করতে পারেনি। এমতাবস্থায় বাড়িটির বর্তমান মালিক মনিরুল ১৪ জুলাই মিরপুর থানায় নিরাপ্তত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। তার অনুরোধের পরিপেক্ষিতে আজ গুপ্তধন উদ্ধার কাজ চালায় পুলিশ।
বাড়ির মালিক মনিরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি গত আট বছর আগে এই বাড়িটি কিনেছি। বর্তমানে দুজন কেয়ারটেকার এই বাড়িতে বাস করেন। মিরপুর পল্লবীতে আমার আরেকটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবার করি।’
‘বাড়ির নিচে গুপ্তধন রয়েছে, কে বা কারা এ বিষয়ে থানায় জিডি করেন। এরপর গত ১২ জুলাই রাতে জোর করে কয়েকজন যুবক আমার বাড়ির ভিতরে ঢোকার চেষ্টা চালায়। পরদিন আমি মিরপুর মডেল থানায় গিয়ে এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়ারি করি। পাশাপাশি আমার বাড়ির মাটির নিচে যদি কোনো ধরনের গুপ্তধন থাকে তবে তা উদ্ধারের আহ্বান জানাই।’
এ উদ্ধার কাজে সকল ব্যয়ভার নিজে বহন করারও আশ্বাসও দেন মনিরুল ইসলাম।
সারাবাংলা /এসএইচ/এমঅাই