পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে
২১ জুলাই ২০১৮ ১৭:৩১
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: পরিবেশ দূষণকারী পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। না হলে আগামীতে পরিবেশের উপর যে বিপর্যয় নেমে আসবে তাতে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (২১ জুলাই) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আগারগাঁওয়ের বন ভবনে ‘পরিবেশ দূষণ: পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জ্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেন, ‘পরিবেশের ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে হলে সাধারণ মানুষের সচেতনতার পাশাপাশি সরকারকে সচেতন হতে হবে। বুড়িগঙ্গা ও সুন্দরবনকে রক্ষা করার জন্য জনসচেতনতা যতটুকু দরকার তার থেকে অনেক বেশি দরকার সরকারের সচেতনতা।’ এটা রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিষয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জাতীয় উন্নয়নের দোহাই দিয়ে আমরা পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু প্রশ্ন হলো পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে জাতীয় উন্নয়ন কি বেড়েছে? বনভূমি উজাড় করে জাতীয় উন্নয়ন হয়নি বরং পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। জলাভূমি ধ্বংস করে যে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা হয়েছে তাতে কতটা জাতীয় উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে?’
তিনি আরও বলেন, ‘নদী-নালা, খাল-বিল দখলকারীরা এখন রাজনীতিতে এসেছে। আগামীতে দখল করতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সে কারণেই এই দখলকারীরা রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করছেন।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ বলেন, ‘প্লাস্টিক পণ্যের সর্বশেষ জায়গা হচ্ছে বঙ্গোপসাগর। নদী-নালা দূষিত করে এখন সেটি বঙ্গোপসাগরকে নষ্ট করে দিচ্ছে। এখনই যদি পরিবেশের এই আগ্রসন রোধ করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে। আর পরিবেশের নিশ্চয়তা যদি আমরা না করতে পারি তাহলে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না।’
সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেমন দায়িত্ব পালন করবেন আবার সাধারণ মানুষেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সঠিকভাবে আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে। আমাদের শক্তিশালী আইন আছে কিন্তু সে আইনের প্রয়োগ যথাযথ হচ্ছে না। আইন অমান্যকারীরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে অনেক সমস্যা আমরা দূর করতে পারছি না।’
পলিথিনের উৎপাদনের জায়গাটা সরকার বন্ধ করতে পারলে এক্ষেত্রে অনেকটা কাজে দিতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পলিথিন যদি বাজারে না থাকে এবং মানুষের হাতে যদি না আসে তাহলে ব্যবহার এমনিতেই কমে যাবে।’
সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ‘পলিথিনের বিকল্প হিসেবে কোনো পণ্য দেওয়া সম্ভব হলেও তবেই এটা সহজে রোধ করা সম্ভব হবে।’ পলিথিনের ভয়াবহতা বিষয়ে স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচিতে অন্তুর্ভূক্তের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি: পবা
সারাবাংলা/এজেডকে/এমও