‘ট্রাম্প আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি ’
২১ জুলাই ২০১৮ ২১:৫৮
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
হেলসিংকি বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমার দেখা এ যাৎকালের ‘আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি’ মনে হয়েছে, বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির অন্যতম ডেমোক্যাট দলীয় কংগ্রেস সদস্য অ্যাডাম শিফ।
ইয়াহু নিউজ পডকাস্ট স্কালড্রাগারিকে দেওয়া এক স্বাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেখিয়েছেন তিনি ‘কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে প্রতারণা করতে প্রস্তুত।’
‘গত দেড় বছরে আমার জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর উপলব্ধি হচ্ছে—আমাদের প্রেসিডেন্ট বিচার বিভাগকে আক্রমণ ও সংবাদমাধ্যমকে কলঙ্কিত করে যে ক্ষতি করেছে তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্রের যে ক্ষতি করেছে সেটার তুলনা করা যায় না, বলে মনে করেন শিফ।
‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাশিয়া কূটনৈতিকভাবে যে ক্ষতি করতে পারতো, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছেন।’
গত দেড় বছর ধরে বিভিন্ন ক্যাবল টিভি চ্যানেলে অ্যাডাম শিফ ট্রাম্পকে নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা করলেও এবার তার বক্তব্য অন্যন্য সমালোচনাকারীদেরও অনেক বেশি প্রভাবিত করেছে। ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্কালডাগারিকে দেওয়া স্বাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
পুতিন ট্রাম্পের ওই বৈঠকের পর তাদের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও দেখা যায়। সেখানে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার প্রাপ্ত তথ্যকে (যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপকে) প্রশ্নবিদ্ধ করেন। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের ব্যাপারটি তার কাছে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখান করেছেন পুতিন।
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন না করা হলেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প আদৌ কোনো সমঝোতা করেছে কি-না।
‘দেখেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ন্যাটোকে কেন শক্তিহীন করলেন এটা ব্যাখ্যা না করা হলেও, যে কারও পক্ষেই বুঝে নেওয়া সম্ভব। কেন তিনি সমগ্র ইউরোপকে শক্তিহীন করছেন, কেনো তিনি এগুলো করছেন। এটা সেই রাশিয়া যারা আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে, বলেন শিফ।
তিনি বলেন, ‘এটা হতে পারে সেখানে কিছু কার্য-কারণ রয়েছে যেটা তার পক্ষে কাজ করেছে। এই কারণেই নির্বাচনের আইনগত বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠলে তিনি এভাবেই রেসপন্স করেন। সেখানে কোনো কার্য-কারণ থাকতে পারে। কোনোভাবে সে রাশিয়ার সঙ্গে আপোষ করে থাকতে পারে। এর ফলে রাশিয়া তার ব্যবসার মাধ্যমে তাকে অর্থ সরবরাহ করেছে, এবং এটা তিনি জানেন এবং তারাও জানতো।’
কিন্তু এর সঙ্গে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তিনি কারও সঙ্গে আপোষ করেছেন উল্লেখ করে শিফ বলেন, তার এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটিতে তার রিপাবলিক সহকর্মীদের থেকে বারবার অস্পষ্ট উত্তর পেয়েছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি রিপাবলিক পার্টির একজন কর্মচারীকে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা এবং সন্দেহের তালিকা থাকা রাশিয়ান কোর্টি সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে নিষেধ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এমআই