Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্যাংক ঋণের ১১ শতাংশ খেলাপি


২১ জুলাই ২০১৮ ২১:৪৪

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বর্তমানে বাংলাদেশের মোট ব্যাংক ঋণের ১০.৭৮ শতাংশ খেলাপি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯.৩১ শতাংশ। শনিবার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এ তথ্য জানান।

এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়ায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১.৬ শতাংশ, ফিলিপাইনে ১.৯ শতাংশ, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় ২.৯ শতাংশ, কম্বোডিয়ায় ২.৫ শতাংশ, শ্রীলংকা ২.৬ শতাংশ এবং নেপালে ২ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে।

ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে আয়োজিত “খেলাপি ঋণ আদায়ে এডিআর’র ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক।

এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মিডল্যান্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান-উজ জামান, ইউএ্যাব-এর বোর্ড অফ ট্রাস্ট্রি অধ্যাপক ইমরান রহমান, বিয়াক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ইভিপি ও হেড অফ লিগ্যাল ব্যারিস্টার শাফায়াত উল্ল্যাহ।

মূল প্রবন্ধে ব্যারিস্টার শাফায়াত উল্ল্যাহ বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এ থেকে উত্তরণের জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিকে (এডিআর) বিকল্প পন্থা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের সামষ্টিক ব্যাংক ঋণের প্রায় ১১ শতাংশই খেলাপি।’

ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের উচ্চহারের কারণে ভালো গ্রহিতারা প্রয়োজনীয় ঋণ পাচেছন না এবং উদ্যোক্তারা উচ্চ হারে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন।’

ডিসিসিআই’র সভাপতি খেলাপি ঋণ কমানো জন্য ব্যাংকসমূহে করপোরেট গর্ভনেন্স বাস্তবায়ন এবং সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন, ঋণ আদায়ে জিরো টলারেন্স নীতিমালা গ্রহণ করে, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির উপর আরো বেশি মনোযোগী হওয়া আহ্বান জানান।

সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, ‘বর্তমানে আদালতে অর্থ ঋণ বিষয়ক মামলার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে মামলা জট কমানো ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিয়াক অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ২ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে ১০ শতাংশের অধিক, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

বিয়াক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের দেশে একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানে সম্ভব হলে আমাদের দেশের আর্থিক খাতকে আরো শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।’

বিয়াক-এর সিইও মোহাম্মদ এ আলী বলেন, ‘ব্যাংকের তারল্যের সঙ্গে খেলাপি ঋণের বিষয়টি সরাসরি ভাবে সম্পৃক্ত। খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পূর্বে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ধারাটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে অন্তভূর্ক্ত থাকা প্রয়োজন।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সালমা নাসরিন বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির সুস্থ বিকাশের জন্য কার্যকর ব্যাংক ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আর্থিক খাতের খেলাপি ঋণের বিষয়টি আমাদের অর্থনীতির জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিয়াকের মত অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে কার্যকর অবদান রাখতে সক্ষম।’

বলেন, ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া পুনঃবিন্যাসের বিষয়টিতে ব্যাংকসমূহের আরো মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, আর্থিক বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এডিআর ও মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া সমাধান হিসেবে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এবং এর মাধ্যম আদালতে মামলার সংখ্যা হ্রাস পাবে।

নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ নারী বিচারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তানজিনা ইসমাইল, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ডিএমডি মো. আব্দুল ওয়াদুদ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মামদুদ রশিদ, ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান, ব্যারিস্টার শিরীন শেখ মাইনুদ্দীন প্রমুখ অংশ নেন।

সারাবাংলা/জিএস/এমও


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর