Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উৎসবের পর শহর যেন আস্তাকুঁড়


২২ জুলাই ২০১৮ ০৮:৫৮

।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর।।

ঢাকা: বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চলাকালে শুধু খেলা নয়, অনেকগুলো দেশ বিশ্বে বাহবা পেয়েছিল সমর্থকদের কর্মকাণ্ডের জন্য। বিশেষ করে জাপানের সমর্থকরা এক অনন্য নজির স্থাপন করে বিশ্বকাপে। খেলা শেষে তারা সবাই মিলে পরিষ্কার করে গ্যালারি ও আশপাশের জায়গা। তাতে ম্যাচে হারলেও বিশ্ববাসীর মন জয় করে নেয় জাপান।

আমাদের দেশেও প্রতিনিয়ত অনেক উৎসব হয়। দলবেঁধে মানুষেরা জড়ো হয় একটি স্থানে। তারা আনন্দ করে, উদযাপন করে। আর সবশেষে নোংরা-অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ে থাকে উৎসবস্থল, যেন আস্তাকুঁড়।

যেকোনো জাতীয় উৎসবের এই নিত্যচিত্রের ব্যতিক্রম হয়নি শনিবার (২১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণসংবর্ধনাতেও। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে, বাংলাদেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়া থেকে গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন, ভারত থেকে পেয়েছেন ডি-লিট ডিগ্রি- এমন সব অর্জনে উদযাপন হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন সব অর্জনে এগিয়ে যাওয়া দেশের মানুষের মধ্যে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে কতটুকু? শনিবারের গণসংবর্ধনার পর সংবর্ধনাস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় গেলে এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে, পরিবেশ সাক্ষরতায় এখনও আমরা যোজন যোজন পিছিয়ে।

শনিবার বিকেলে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পর সরেজমিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সংলগ্ন এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, গোটা এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নোংরা-আবর্জনা। খাবারের খালি বক্স তো বটেই, খাবারের উচ্ছিষ্টের দেখা যেমন মিলেছে, তেমনি এখানে-ওখানে পড়ে রয়েছে পানির বোতল-ক্যান; এমনকি মলমূত্রের দেখাও মিলেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান জানান, আমি একটি কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। মল চত্বরকে একটি বিরাট ডাস্টবিন ছাড়া কিছু ভাবা যায় না। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না।

‘আমি একবার মালেয়শিয়ায় সাগরে স্পিড বোটে করে আসছিলাম। আমার এক সহযাত্রী চলন্ত বোট থেকে একটা ক্যান সাগরে ছুঁড়ে মারেন। চালক বোট ঘুরিয়ে সেই ক্যান খুঁজে বের করে সেই যাত্রীকে অনুরোধ করেন ক্যান তুলে আনতে।’, বলেন এ শিক্ষক।

মুজিবুর রহমান মনে করেন, যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশের একটা ‘কোড অফ কন্ডাক্ট’ তৈরি হওয়া উচিত যেন অনুষ্ঠান শেষে সভাস্থলে আসা মানুষেরা জায়গাটাকে ঠিকভাবে রেখে যেতে পারেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, আমাদের পাঠ্যবইয়ে যেমন শিশুদের পরিবেশ সম্পর্কে পড়ানো হয়, তেমনি তাদের হাতে-কলমে শেখানো যায়, পরিবেশ কিভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। এমন উৎসবের দিনগুলোতে রোভার স্কাউট, বিএনসিসির মতো স্বেচ্ছাসেবক সংস্থাগুলো কাজ করতে পারে সবাইকে সচেতন করতে।

অর্থনীতির উন্নয়নের সঙ্গে যখন পরিবেশ নিয়ে এই সচেতনতা ও মানসিক উন্নয়ন হবে, সেটাই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন বলে মনে করেন এ শিক্ষক।

সারাবাংলা/এমএ/টিআর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৪০

সম্পর্কিত খবর