আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা
২২ জুলাই ২০১৮ ১৭:২৩
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
কুষ্টিয়ায়: দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়ায় আদালত চত্বরে হামলার শিকার হয়েছেন। সদর থানার ওসি ও একদল পুলিশের সামনে ছাত্রলীগ এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, হামলার সময় কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তার নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। হামলা শেষে মিছিল করতে করতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি।
মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়া আদালতে মানহানি মামলায় রোববার (২২ জুলাই) হাজিরা দিতে যান। ওই মামলায় তিনি জামিনও পান। মামলাটির বাদী ছিলেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার।
জামিন শেষে মাহমুদুর রহমান আদালত চত্বরে অপেক্ষা করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় লাঠিসোটা নিয়ে তার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
তবে হামলার বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। সেই মামলায় মাহমুদুর রহমান হাজিরা দিতে এসেছিলেন। আমরা সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে কালো পতাকা নিয়ে কর্মসূচি পালন করেছি। এরপর আমি আইনজীবীর রুমে গিয়ে বসি। আমি ওই মানহানি মামলার বাদী।’
‘ছাত্রলীগ নয়, দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা করেছে। আমি নিচে গিয়ে মাহমুদুর রহমানকে রক্ষা করি। এরপর পুলিশের কাছে তাকে নিরাপদে পৌঁছে দিই।’
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী একজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটি ন্যাক্কারজনক কাজ হয়েছে। বিরোধীমত থাকতেই পারে, তাই বলে এই হামলা করতে হবে কেন? আদালত তো নিরাপদ জায়গা। সেখানেই যদি হামলার ঘটনা ঘটে তাহলে তো নিন্দনীয়। মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনাটি নিন্দনীয় হয়েছে।’
ওই আইনজীবী বলেন, ‘হামলার সময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত ছিল। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে মার খাইয়েছে।’
কুষ্টিয়া সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মাহমুদুর রহমানকে পেছনের পথ দিয়ে বেরিয়ে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু মাহমুদুর রহমান কথা শোনেননি। তিনি সামনের পথ দিয়েই গেছেন। পেছনের পথ দিয়ে গেলে হামলার এই ঘটনা ঘটত না।’
ওই সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক তাকে সামনের পথ দিয়ে এনেছেন।’
হামলার আগে ফেসবুক লাইভে মাহমুদুর রহমান জানান, পুরো আদালত চত্বরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মহড়া দিচ্ছেন। তাদের উদ্দেশ্য কী বুঝতে পারছি না। তবে এটা বুঝতে পেরেছি তারা আমাকে এখান থেকে বের হতে দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘আমি মানহানি মামলায় হাজিরা দিতে এসেছি। মানহানি মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে জামিন দিয়েছেন। কিন্তু জামিন দেওয়ার পর তারা আমাকে বের হতে দিচ্ছে না। এখানকার যে ওসি এবং এসপি তার ইন্ধনে এই কাজটি হচ্ছে। ওসি-এসপি দেখেও না দেখার ভান করছেন। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব ওসিকে ডাকলেন। পুলিশের ঔদ্ধত্য কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সামান্য সৌজন্য দেখানোর জন্য ওসি এখানে আসেননি। তিনি বলে দিলেন, তিনি আসতে পারবেন না।’
‘বাংলাদেশ কোন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এই দেশের জনগণ যদি লড়াই না করে, লড়াই করে যদি ভারতের দালাল সরকারকে প্রতিহত না করে তাহলে এদেশের মানুষের মুক্তি আসবে না’ ফেসবুকে বলেন মাহমুদুর রহমান।
রোববার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মাহমুদুর রহমান তার ফেসবুক পেজে ওই ভিডিও শেয়ার দেন। বিকেল ৫টার দিকে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
সারাবাংলা/একে