শিক্ষক-শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ তৈরির আহ্বান ঢাবি শিক্ষক সমিতির
২২ জুলাই ২০১৮ ২০:৩৪
।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাবি: বাইরের কোনো অশুভ শক্তিকে আহ্বান না করে, কোনো ষড়যন্ত্রে পা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ রচনা করার জন্য আন্দোলনরতদের আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
রোববার (২২ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন প্রাঙ্গণে ‘সচেতন শিক্ষক সমাজের ব্যানারে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মানে শিক্ষার্থী থাকবে, শিক্ষার্থী বান্ধব হবে। শিক্ষার্থী যদি না থাকে তাদের যদি অধিকার না থাকে তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে পারে না; শিক্ষক হিসেবে আমরা থাকতে পারি না। সেই জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীবান্ধব একটি পরিবেশ রচনা করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকেও আমরা আলোচনার আহ্বান জানাই। আপনারা আসুন আমরা আলোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি সুষ্ঠু স্থিতিশীল শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করি।
গত ১৯ জুলাই নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের সমাবেশে একজন শিক্ষক বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করেছেন অভিযোগ করে অধ্যাপক মাকসুদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মূলমন্ত্র হলো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে। কোনো শিক্ষক যখন মুক্তিযুদ্ধকে আঘাত বা নিপীড়ন করেন এবং সামনে যারা বসে থাকে তারা হাততালি দেয়; তখন বুঝতে হবে সমস্থ গোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করার জন্য এই ধরনের আয়োজন করেন।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই থেকে সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছে কিন্তু জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাতকোটি। যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছে তারা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই গিয়েছে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটার বিষয়টি রেখেছেন। এই ধরনের প্রক্রিয়া এখনও আধুনিক রাষ্ট্র ফ্রান্সেও আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ অ্যান্ড এনভারোনমেন্টাল সাইয়েন্স অনুষদের এই ডিন বলেন, আজকে যখন বঙ্গবন্ধুকে আঘাত করে কথা বল তখন আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের শিক্ষকরা চুপ থাকতে পারি না। বঙ্গবন্ধুকে আঘাত করা মানে জাতির অস্তিত্বে আঘাত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত করা।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের সংহতি সমাবেশে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, নিপীড়নবিরোধী একজন শিক্ষককে বলা হয়েছে তিনি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন কি-না। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন।
কোনো শিক্ষার্থীকে যেন একটি দিনও অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ থাকতে না হয় উল্লেখ করে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করুন। যদি কেউ গ্রেফতার অবস্থায় থাকে তাকে যেন অনতিবিলম্বে ছাড়িয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ বজায় থাকে। ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করুন। আলাপ আলোচার মাধ্যমে সমাধানের জন্য বলেন।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, সদস্য অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক আ জ ম শফিউল আলম ভূইয়া, অধ্যাপক সুপ্রিয়া সাহা, অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ড মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূূইয়া। মানববন্ধনের আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং সঞ্চালোচনা করেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
সারাবাংলা/কেকে/এমআই