পাহাড় কেটে রোহিঙ্গাদের বসতি, ভয়াবহ বিপর্যয়ের শঙ্কা
২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৬:২৬
ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার
কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না রোহিঙ্গা ঢল। গত ২৫ আগস্ট থেকে গেল ৩ মাসে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। অন্যদিকে আগে থেকে দেশে অবস্থান করছিল আড়াই লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলে সাড়ে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে উখিয়া’র পাহাড়ি এলাকায়। আর রোহিঙ্গারা পাহাড় কেটে তৈরি করছে বসতি। এতে গাছপালা হয়ে পড়েছে পাহাড়ি এলাকা। ফলে পরিবেশের ওপর যেমন বিরূপ প্রভাব পড়ছে তেমনি পাহাড় ধ্বসে বড় ধরনের অঘটনের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।
তথ্যমতে, গত ২৫ আগস্ট থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত উখিয়া ৪ হাজার ২ শত একর পাহাড়ি এলাকায় বসতি স্থাপন করেছে রোহিঙ্গারা। আর তা অব্যাহত রয়েছে। এতে সম্পূর্ণভাবে দখলে যাচ্ছে পাহাড়ি এলাকা। শূন্য হচ্ছে বনভূমি।
পরিবেশবিদরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের পাহাড় দখলের ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। এই ক্ষতির জন্য অপরিকল্পিত বসতি স্থাপনকেই দ্বায়ী করছেন তারা।
এদিকে প্রকৃতি আর পরিবেশ সর্ম্পকে ধারণা না থাকা রোহিঙ্গা বলছেন, আশ্রয়ের জন্য পাহাড় কাটছে। অনেকে আবার অন্যের দেখাদেখি এটি করছে।উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পে’র রাবেয়া খাতুন নামে এক রোহিঙ্গা নারী জানান, কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই পাহাড় কেটে ঘর করেছেন। এছাড়া অন্যরাও একই কাজ করছে।
বালুখালী ক্যাম্পের মফিজুর রহমান নামে আরেক রোহিঙ্গা জানান, মিয়ানমারের অত্যাচার থেকে প্রাণ বাঁচাতে এদেশে এসেছেন। এদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু পাহাড় কাটতে না বললেও তারা বাধ্য হয়ে পাহাড় কাটছেন।
কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) মো. আলী কবির জানান, উখিয়া-টেকনাফের বেশিরভাগ পাহাড় এখন রোহিঙ্গাদের দখলে। যতই নতুন নতুন রোহিঙ্গা আসছে ততই পাহাড় দখলের পরিমাণ বাড়ছে। তিনি আরও জানান, পাহাড় কেটে অপরিকল্পিত বসতি স্থাপনের ফলে পাহাড় ধ্বসে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।
পাহাড় কাটায় পরিবেশের ক্ষতির ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশরাফ জানান, পাহাড় কাটার ফলে মারাত্মকভাবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব তা সমাধান করতে হবে। অন্যথায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সারাবাংলা/টিএম/একে