‘শিগ্গিরই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হবে’
২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৬:৫০
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘কবে নাগাদ প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে তার সর্বশেষ তথ্য আমার কাছে নেই। আমি আশা করব, খুব শিগ্গিরই নিয়োগ দেওয়া হবে।’
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে মঙ্গলবার জেনারেল প্রসিকিউটর (জিপি) এবং পাবলিক প্রসিকিউটরদের (পিপি) এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দেড় মাস হতে গেল প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হয়নি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত সর্বশেষ কোনো তথ্য আপনার কাছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো তথ্য নাই যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। এটা যেহেতু সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাব বলা আছে, এটা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। আমি সত্যি সত্যি জানি না কবে দেবেন। তবে আমি আশা করবো খুব শিগ্গিরই হবে। এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারব না।’
ষোড়শ সংশোধনীর মামলার আপিল খারিজ করেছিল সাত সদস্যের বেঞ্চ কিন্তু বর্তমানে আপিলে আছে পাচঁ সদস্য এ ক্ষেত্রে তারা রিভিউ আবেদন শুনানি করতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন সুপ্রিমকোর্ট রুলস পড়ে আমার যেটা ধারণা হয়েছে, অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাতে আমি বলতে পারি নতুন বিচারপতির জন্য রিভিউ পিটিশন শুনানি বন্ধ থাকবে না। আপনারা যদি দেখেন সুপ্রিমকোর্ট রুলসে বলা আছে, সো ফার এজ ইজ প্রাক্টিক্যাবল সেইম বেঞ্চ উইল হেয়ার দি রিভিউ পিটিশন। তার মানে হচ্ছে যতদূর সম্ভব যেই বেঞ্চ এটা শুনানি করেছিল সেই বেঞ্চই রিভিউ শুনানি করবে। সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয় না, নতুন করে জাজ অ্যাপায়ন্টমেন্ট দিতে হবে। পাচঁজন বিচারপতি শুনানি করতে পারবেন।
গেজেটের মাধ্যমে নিম্ন আদালতকে আপনারা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছেন আর রিভিউ ফাইল করে উচ্চ আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকার্ষণ করা হলে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, ডিসিপ্লিনারি রুলসের মধ্যে যে সব জিনিস বিধি হিসেবে রাখা হয়েছে তার মধ্যে ২৯ (২) বিধিতে বলা আছে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের কোনো বিষয়ে মতপার্থক্য হয়ে যায় এবং আলোচনার পরও যদি সেটা নিরসন না হয়। তাহলে সুপ্রিমকোর্টের মতামত প্রাধান্য পাবে। এখানেই তো পরিষ্কার যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার আসল পয়েন্ট হচ্ছে এটা যদি সুপ্রিমকোর্টের কন্ট্রোলে থাকে তাহলে পরে বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকবে। এটা কিন্তু নির্বাহী বিভাগের কন্ট্রোলে না। নির্বাহী বিভাগ কন্ট্রোলে নেওয়ার চেষ্টাও করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি হচ্ছে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রথম ব্যক্তি। এটা তার কাছে, তার উপর সংবিধান দ্বারা ন্যস্ত। তারপরও আরেকটি বড় কথা আছে, যাদের জন্য এই রুলস করা হয়েছে তাদের তো একটা মতামত আছে এই গেজেটের বিষয়ে। তাদের মতামত যখন গ্রহণ করা হয়েছে। তারা মনে করেছে মহামান্য রাষ্ট্রপতির হাতে থাকলে তাদের স্টেটাস বজায় থাকে। সব বিবেচনায় সংবিধান যা বলে দিয়েছেন সেটাকে প্রাধান্য দিয়ে এই ডিসিপ্লিন (শৃংখলা) রুলস করা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ওনারা (বিএনপি) তো পকেটে নিয়ে রেখেছিলেন, ওনারা আইনটা পকেটে নেওয়ার জন্য জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়া পর্যন্ত করেছেন। এই রকম জিনিস আমরা করিনি। সেটা থেকে বের করে নিয়ে আমরা আস্তে আস্তে বিচার বিভাগকে একটা মর্যাদার আসনে বসাচ্ছি। সেই জন্যই ওনাদের এত গাত্রদাহ হচ্ছে।’
এর আগে আইনমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি শুধু এই কথা বলতে চাই বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে কমিটমেন্ট, সে রকম কমিমেন্ট বঙ্গবন্ধুর সরকারের পর কোনো সরকার করেনি। সে জন্য আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ সরকারই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সমুন্নত রেখেছে। পাশাপাশি অন্যান্য সরকার যেগুলো ছিল আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি সেই সব সরকার বেসিক রুল অব ল’র যে প্রিন্সিপলস সেগুলো উপেক্ষা করে দেশ চালিয়েছে। আমরা যা করেছি তা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ন রেখে করেছি। আমাদের মত বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আর কোনো সরকার হয়নি।’
প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক বিচারপতি খাদেমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক।
সারাবাংলা/এজেডকে/এমএ/আইজেকে