সাতকানিয়া ভেঙে নতুন থানা গঠনের বিরোধিতায় স্মারকলিপি-সমাবেশ
২৬ জুলাই ২০১৮ ২১:১০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম জেলায় প্রস্তাবিত নতুন পাঁচ থানার মধ্যে ‘দোহাজারি-সাঙ্গু’ থানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে থানাটি গঠনের উদ্যোগ প্রায় চূড়ান্ত হয়ে এসেছে। এ অবস্থায় নতুন থানা গঠনের ক্ষেত্রে কিছু আপত্তি তুলে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
এরই মধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি দিয়ে নতুন থানা গঠন নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছেন বলে সারাবাংলা’কে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ।
তিনি বলেন, সাতকানিয়ার ছয়টি ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং জনপ্রতিনিধিরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশের আইজি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারা চন্দনাইশের সঙ্গে যেতে চান না অথবা নিজেরা সাতকানিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চান না। শুনেছি তারা শনিবার (২৮ জুলাই) মানববন্ধন কর্মসূচিও দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি দেখছি।
নতুন থানার সঙ্গে চন্দনাইশের দোহাজারি ও ধোপাছড়ি ইউনিয়ন যুক্ত না করার দাবিতে শনিবার সাতকানিয়া উপজেলার কেরাণীহাটে সমাবেশের ডাক দিয়েছে ওই ছয় ইউনিয়নের মানুষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চন্দনাইশ উপজেলার ১১টি ও সাতকানিয়া উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ, কেওচিয়া, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরাণগর ও খাগরিয়া ইউনিয়ন এবং চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারি ও ধোপাছড়ি ইউনিয়ন নিয়ে ‘দোহাজারি-সাঙ্গু’ থানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
২০১৫ সালে চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার ১০টি থানা বাড়ানোর প্রস্তাব সদর দফতরে পাঠিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব পরে একদফা সংশোধন করে পাঁচটি করা হয়। বর্তমান এসপি নূরে আলম মিনা যোগ দেওয়ার পর তারই উদ্যোগে এই প্রস্তাব গণশুনানি পর্যন্ত পৌঁছে।
সূত্রমতে, পাঁচটি থানার মধ্যে হাটহাজারী উপজেলাকে দুইভাগে বিভক্ত করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানা, সাতকানিয়া উপজেলা এবং চন্দনাইশ উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে সাঙ্গু থানা, রাউজান থানাকে ভেঙে দক্ষিণ রাউজান, পটিয়া থানাকে ভেঙে পশ্চিম পটিয়া বা কালারপোল থানা এবং রাঙ্গুনিয়া থানাকে ভেঙে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর মধ্যে গত জানুয়ারিতে তিনটি থানার প্রস্তাবের উপর জেলা প্রশাসন গণশুনানি সম্পন্ন করে সেই প্রস্তাব পুলিশ সদর দফতরে পাঠায়। তিনটি থানা হচ্ছে- দোহাজারি-সাঙ্গু, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানা।
গণশুনানি প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আছে বলে জানিয়েছেন রেজাউল মাসুদ।
তিনি সারাবাংলা’কে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে যাবে প্রস্তাব। এরপর প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন।
এই অবস্থায় সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফেজ আহমদ, কেওচিয়ার চেয়ারম্যান মনির আহমদ, বাজালিয়ার তাপস কান্তি দত্ত, পুরাণগরের আ ফ ম মাহবুবুল হক, ধর্মপুরের ইলিয়াছ চৌধুরী, খাগরিয়ার চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন স্মারকলিপি দিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে তারা চন্দনাইশের দুই ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে শুধু উত্তর সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়ন নিয়ে থানা গঠনের দাবি জানান। এতে বলা হয়, এই ছয় ইউনিয়ন নিয়ে নতুন থানা গঠন করলে জনগণ বৈষম্য থেকে মুক্তি পাবে।
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ