বিপ্লবী প্রীতিলতা ও বীণা দাসকে স্নাতক ডিগ্রি
২৭ জুলাই ২০১৮ ১৬:০২ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ১৬:৪৬
।। শুভজিৎ পুততুন্ড, কলকাতা থেকে ।।
কলকাতা: বিপ্লাবী দুই অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ও বীণা দাসকে ৮৬ বছর পর স্নাতক ডিগ্রি দেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তবর্ষ উপলক্ষে এই দুই বিপ্লবীর স্নাতক ডিগ্রি দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) প্রীতিলতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার ডিগ্রি তুলে দেওয়া হয় কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের হাতে।
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মোফখারুল ইকবাল বলেন, ‘একজন মহান বীরকন্যা যিনি ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন কারণ সেখানে লেখা ছিলো ভারতীয় ও কুকুর প্রবেশ নিষেধ। সেই আক্রমণে ব্রিটিশ সেনার হাতে ধরা দেননি তিনি । পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। যিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক হয়েছিলেন কিন্তু সনদ গ্রহণ করতে পারেননি । আজ তার হয়ে তার সনদ গ্রহণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের হেড অফ চ্যান্সেরি জামাল হোসেন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩২ সালে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়েদ্দেদার ডিস্টিংশনের সাথে বিএ পাশ করেন। কিন্তু তিনি শহীদ হওয়ার পর তার সনদ কেউ গ্রহণ করেনি। আজ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের তরফে আমরা তা গ্রহণ করলাম । ভিসি এটি আমাদের হাতে তুলে দিলেন। এবার যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সনদটি চট্টগ্রামে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়েদ্দেদারের ট্রাস্টের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা আমাদের কনভোকেশনে ওনার সার্টিফিকেটা দিয়েছিলাম কিন্তু সেই সময় এটি নেওয়ার মত কেউ ছিল না। আজ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন সেই ঐতিহাসিক সার্টিফিকেট চেয়ে আবেদন জানালে আমরা তা তাদের হাতে তুলে দিতে পেরে গর্বিত বোধ করছি।’
১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ছাত্রী হিসাবে ডিগ্রি নেওয়ার কথা ছিল চট্টগ্রামের প্রীতলতা ওয়েদ্দোরের। কিন্তু তার আগেই প্রীতিলতার মৃত্যু হয়। প্রীতিলতাকে ডিগ্রি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রথমে আবেদন জানিয়েছিল কলকাতার চট্টগ্রাম পরিষদ।
ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রিভলভার লুকিয়ে সমাবর্তন কক্ষে ঢুকেছিলেন ২১ বছরের বীণা। তৎকালীন বাংলার গভর্নর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে লক্ষ্য করে পরপর পাঁচটি গুলি চালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন কক্ষ থেকেই গ্রেফতার হন বীণা দাস। তারও আর কখনও সনদ নেওয়া হয়নি।
সারাবাংলা/এনএইচ