Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মাহমুদুর ও শফিক রেহমানের প্রকৃত চেহারা মানুষ বুঝতে পারেনি’


২৭ জুলাই ২০১৮ ১৫:৩২

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমান যে কত টাকা-পয়সার মালিক সেটা দেশের জনগণ এখনও বুঝতে পারেনি। ওই দুইজনের উদ্দেশ্য ছিল জয়কে অপহরণ করা। অর্থ ও পরামর্শ দিয়ে এ ঘটনা তারা ঘটাতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সেটি পারেনি। এ  বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা ও পূনর্মিলনীর অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বিনিয়োগ বোর্ডের সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ছিলেন।

গত রোববার (২২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া আদালত প্রাঙ্গণে তিনি হামলার শিকার হন। হামলার বিষয়ে মাহমুদুর রহমানের অভিযোগ জেলা ছাত্রলীগ এ হামলা চালিয়েছে। তবে হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত নয় বলে দাবি করেছে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলার আসামি সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমান। জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল নিউইয়র্কে। সেখানে এই মামলার বিচার শেষ হয়েছে। মামলার রায়ে সেখানকার বিএনপি নেতার ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের ৪২ মাসের কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া ঘুষ লেনদেনের জন্য এক এফবিআই এজেন্টের বন্ধুর ৩০ মাসের কারাদণ্ড হয়।

আর জয়কে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টা ষড়যন্ত্রের নির্দেশদাতা হিসেবে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানায় মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল এ মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। মাহমুদুর রহমানও এ মামলায় জামিনে আছেন।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে তাদের নেতৃত্বে পেট্রোল বোমা, আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনা তুলে ধরেন। পাশাপাশি প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে হত্যা, পাওয়ার প্ল্যান্টে আগুন দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারকে আগুনে ফেলে হত্যার ঘটনাসহ ২৭ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হত্যার বিষয়টি তুলে ধরেন।

বিএনপির-জামায়াতের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। তাদের এ অপকর্ম ও অত্যাচার সবাই দেখেছে। এদের ওপর মানুষের কোনো আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই। এটি আজকে প্রমাণিত। এরা দুর্নীতি মানিলন্ডারিং করেছে, এটা বাংলাদেশে বলা লাগবে না, সূদুর আমেরিকায় প্রমাণিত হয়েছে।’
‘তারা দুর্নীতি করে এত টাকা কামিয়েছে, এফবিআই’র অফিসারকে কিনে ফেলল এবং সেটা ধরাও পড়ল এফবিআইয়ের কাছে। সেটার বিচার চলল। বিএনপির যে নেতা এ কাজ করেছিল তার কিন্তু শাস্তিও হয়েছে। আর সেই মামলার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, আমার দেশ পত্রিকার পত্রিকার সম্পাদক, সে কিন্তু কোনো সাংবাদিক না, সে একজন ইঞ্জিনিয়ার। পরবর্তীতে সে সংবাদপত্র কিনে হয়ে গেল সাংবাদিক তথা ইঞ্জিনিয়ার সাংবাদিক’ বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
১৯৯৬ মালে সরকার গঠন করে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরও বলেন, সে কিন্তু খালেদা জিয়ার বিদ্যু ও জ্বালানি উপদেষ্টাও ছিল। এ ধরনের উপদেষ্টা থাকলে হ্রাস পাবে তাতে কোনো সন্দেহ নাই।
‘কাজেই এরা কতদূর করতে পারে এবং কত অর্থ সম্পর্দের মালিক তারা দেশ-বিদেশে হয়েছে। সেটা একবার চিন্তা করে দেখেন। এফবিআই’র মতো প্রতিষ্ঠানের অফিসার কিনে ফেলল। আর আমেরিকায় সেটা প্রমাণিত হলো। সেখানেই বিচার হয়েছে, শাস্তি হয়েছে। সেখানেই কিন্তু এ দুজনের নাম চলে এসেছে। অনেকেই হয়ত জানে না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জয়কে অপহরণ করবে এবং তাকে হত্যা করবে। এটিই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। বিএনপির যে নেতা ওখানে ধরা পড়েছে সে প্রকাশ্যেই এটা স্বীকার করেছে এবং এমনও বলেছে, দরকার হলে বের হয়ে এসে আবারও একই কাজ করবো। কাজেই এদের জিঘাংসা এবং অপকর্মের চিহ্ন সব জায়গায় আছে। আমাদের দেশের অনেকেই জানে না, এরা কত রকম নোংরা কাজ করতে পারে।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যক্তিস্বার্থের রাজনীতি দেশকে কিছু দিতে পারে না। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করে না। কিন্তু রাজনীতি যদি হয় জনস্বার্থে জনগণের কল্যাণে, জনগণের মঙ্গলে তাহলে দেশকে কিছু দেওয়া যায়। তা আমরা প্রমাণ করেছি।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের ছোঁয়া গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে জনগণের কল্যাণে যে কাজগুলো করেছে, উন্নয়ন করেছে সেগুলো মানুষের কাছে বলার সঙ্গে সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হবে। কারণ নৌকা তাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে। নৌকা উন্নতি দেবে, সমৃদ্ধি দেবে।

কারণ সুখের সময়ে থাকলে জনগণ সবকিছু তাড়াতাড়ি ভুলে যায় এজন্য জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও গৃহীত কর্মসূচিগুলো তুলে ধরার জন্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগঠনের পক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে কেকও কাটেন নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে ধানমন্ডি-৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণের জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সারাবাংলা/এনআর/জেএএম

আরও পড়ুন:

‘হেপাটাইটিস নিরাময়ে সরকার নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে’

হেপাটাইটিস প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর