‘টাকা দিলে মনোনয়ন’ এভাবে গোলাপের নামে চাঁদাবাজি
২৭ জুলাই ২০১৮ ১৬:৫৮
ডিবি পুলিশ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দেবে মর্মে প্রতারকচক্রের দুই সদস্য গোলাপের কণ্ঠ নকল করে চাঁদা আদায় করত। আবার অসুস্থতার নাম করেও অনেক নেতাকর্মীর কাছ থেকে টাকা তুলেছে তারা।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) বিকেল ৩টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ আলী (৪০) নামে ওই ব্যক্তি গোলাপের নাম ব্যবহার করে টাকা চাইত। তিনি কখনো বলতেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সুযোগ করে দেওয়া হবে, কখনো বলতেন কাছের কেউ অসুস্থ হয়েছে, তাদের হেল্প করার জন্য টাকার দরকার। আবার কখনো বলতেন, আমার একজন কর্মী গুরুতর অসুস্থ কিছু টাকার দরকার। আর সেই টাকা তার বোন নাহিদ সুলতানা (২৭) বিকাশের মাধ্যমে তুলত। আবার অনেক সময় সরাসরি গিয়েও টাকা নিয়ে আসত। সমাজের বিভিন্ন পেশার লোক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মন্ত্রী, সচিব ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে মোবাইল ফোনে টাকা চাইত মোহাম্মদ আলী।’
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) রাত ১২টার দিকে মতিঝিলের গোপীবাগ এলাকা থেকে মোহাম্মদ আলী ও নাহিদ সুলতানাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি মোবাইল ও ছয়টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর আরেক বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফও প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছিল। তবে ওই ব্যক্তি মোহাম্মদ আলী কিনা তা জানতে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে।
প্রতারকচক্রের সদস্যরা কেন আবদুস সোবহান গোলাপের নাম ব্যবহার করত জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গোলাপের মতো কণ্ঠের মিল রয়েছে। তার নাম ব্যবহার করলে সহজেই মানুষজন টাকা দেবে। তাই তার নাম ব্যবহার করেছে। এছাড়া আমরা মোহাম্মদ আলীর ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, ভাইবার আইডিতে ঢুকে দেখা গেছে, সবগুলো আইডিতে গোলাপের নাম ও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত তারা জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসে টাকা তুলত।’
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, ‘মোহাম্মদ আলীকে মোবাইলে কথা বলতে দিয়ে দেখা গেছে অনেকটা গোলাপের কণ্ঠের মতোই শোনা যায়। এছাড়া গ্রেফতার হওয়া দুজন চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকারও করেছে। প্রতারক চক্রটির সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হয়ত তাদের নাম জানা যাবে। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কৌশলে এসব লোকের মোবাইল নম্বরগুলো সংগ্রহ করত মোহাম্মদ আলী। এরপর খুব স্মার্টভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলতেন।’
গ্রেফতার চক্রটির পেশা কী জানতে চাইলে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে তাদের কোনো পেশা নেই। প্রতারণা করা তাদের পেশা। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে হয়ত জানা যাবে আসলে তারা কী করেন?’
সারাবাংলা/ইউজে/একে