ঐ নতুনের কেতন উড়ে
২৭ জুলাই ২০১৮ ২০:২৭
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ট্র্যাক শেষ করে দৌড় দিয়ে সোজা গ্যালারিতে। মায়ের কাছে। কাঁদতে কাঁদতে ফের ট্র্যাকের সামনে। কেঁদেই যাচ্ছেন। না, হারার অশ্রু নয়। এ অশ্রু দেশ জয়ের। এ অশ্রু স্বপ্নজয়ের। এ অশ্রু গতির রাজা হওয়ার।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গতির ট্র্যাক ১০০ মিটারে বাজিমাত করেছেন হাছান মিয়া। নবম শ্রেণী পড়ুয়া এই তরুণই এখন গতির রাজা। ট্র্যাককে নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা দেশসেরা স্প্রিন্টার মেজবাহ আহমেদকে হারিয়ে রাজার আসন গেড়ে বসেছেন বিকেএসপির এই ছাত্র।
গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরের সীমানার পার গ্রামে। ২০১৪ সাল থেকে ট্র্যাকে দৌড়াচ্ছেন তিনি। বয়সভিত্তিক ১০টি স্বর্ণ তার পকেটে। সবশেষ বাংলাদেশ যুব গেমসে স্বর্ণ জয় করেছেন। হ্যান্ড টাইমিংয়ে রেকর্ডটি ছিল ১০.৬০। সেই থেকে শুরু। এখন বিকেএসপিতে পড়ছেন ক্লাশ নাইনে।
আর থামতে হয়নি। এবার জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্সে সিনিয়র প্রতিযোগিতায় নাম লেখালেন প্রথমবারের মতো। আর তাতেই দৃষ্টি কাড়লেন সবার। জিতে নিলেন স্বর্ণও। সেটাও কতটা স্বত:স্ফূর্তভাবে। ট্র্যাকে দৌড়েছেন পেশাদার স্প্রিন্টারদের মতো!
হাছান মিয়া যেভাবে ট্র্যাকে এসেছেন:
শুনুন হাছানের মুখেই, ছোটবেলায় দৌড়াতাম। আসলে পরিবারে দুই ভাই দৌড়াতেন। তারা কখনও জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণ জয় করতে পারেন নি। তাই আমাকে বিকেএসপিতে ভর্তি করিয়ে দিলেন। ২০১৪ সালে। তারপর থেকেই অনুশীলন করছি। ১০ স্বর্ণের সঙ্গে একটি রৌপ্য আছে আমার। ভাই চেয়েছিলেন যাতে আমি স্বর্ণ জিতি। সে যেহেতু কখনও জিততে পারে নি তাই আমাকে সহযোগিতা করেছে। আমি বিকেএসপিতে সবার সহযোগিতা পেয়েছি। তাই জিততে পেরেছি। আমার মা’ও খুশি।
ভবিষ্যত চিন্তা:
হাছান মিয়া জানান, আমি ভাবিনি স্বর্ণ জিতবো। আমার কোচ বলেছেন নিজের সেরাটা দিতে। সেটাই দেয়ার চেষ্টা করেছি। মেজবাহ ভাইয়ের সঙ্গে কখনও দৌড়াইনি। তবে, ভালো লাগছে নিজের সেরাটা দিতে পেরেছি। এখন শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়ার চিন্তা। আশা করছি নিজের এই জায়গা ধরে রাখবো।
মেজবাহর আক্ষেপ:
‘পা দেয়ার ব্লক খুবই খারাপ ছিল। জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় এতো নিম্নমানের ব্লকের কোনও মানে হয় না। তাছাড়া দূর থেকে এসে জার্নি করে প্রাকটিস করে আবার জার্নি করে যেতে হতো। তাই হয়তো পারি নি। তবে, আটবারের রেকর্ড করবো এবং নিজের জায়গা ফিরে পাবো আশা রাখি।’
১০.৮০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০০ মিটারে স্বর্ণ জিতেছেন হাছান মিয়া। ১০.৯০ সেকেন্ড নিয়ে রৌপ্য জিতেছেন মেজবাহ আহমেদ। আর ১১.০০ সেকেন্ড নিয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছেন আব্দুর রউফ।
সারাবাংলা/জেএইচ