অপহরণকারীদের চিনতে পারেননি পারভেজ, নির্যাতিতও হননি
২৮ জুলাই ২০১৮ ১৩:৪৬ | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ১৪:৫২
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: অপহরণের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই সন্ধান মিলেছে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা পারভেজ হোসেন সরকারের। শুক্রবার (২৭ জুলাই) দুপুরে অপহরণের পর মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়ক এলাকা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় তাকে। তবে কে বা কারা তাকে অপহরণ করেছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি। আর তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তার ওপর কোনো শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি বলেও জানান পারভেজ।
শনিবার (২৮ জুলাই) কথা হয় পারভেজের স্ত্রী তাহমিনা আফরোজ ও ভাগনে আবরার সামশাদ জাকির সঙ্গে।
তাহমিনা সারাবাংলা’কে বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, পারভেজ ফিরে এসেছে। সরকার, মিডিয়াসহ সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
জাকি বলেন, ফিরে আসার পর মামা তেমন একটা কথা বলেননি। তবে তিনি বলেছেন, তাকে শুধু চোখ বেঁধে গাড়িতে রাখা হয়েছিল। কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তারপরও এমন একটা ঘটনায় মানসিকভাবে খানিকটা বিপর্যস্ত তো হয়েছেনই।
পারভেজকে উদ্ধার করার পর শুক্রবার রাতেই পুলিশ এসেছিল লালমাটিয়ার বাসায়। আজ (শনিবার) সকালেও পুলিশ ও র্যাব এসে কথা বলেছে বলে জানান জাকি।
পারভেজের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, পারভেজ ফিরে এলেও কারা তাকে অপহরণ করেছিল, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। তিনি শুধু বলেছেন, নামাজ পড়ে বাসার সামনে আসতেই অপরিচিত এক লোক এগিয়ে এসে তাকে বলেন, ভাই কেমন আছেন। ‘এই তো আছি’, বলে পারভেজ হাত মেলানোর জন্য হাত এগিয়ে দিতেই তাকে জোর করে টেনে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়।
তাহমিনা বলেন, ‘গাড়িতে যারা ছিলেন তাদের কাউকেই চিনতে পারেনি পারভেজ। সারা রাস্তাতেই তার চোখ বাঁধা ছিল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন সারাবাংলা’কে বলেন, পারভেজ অপহৃত হওয়ার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ আমরা পেয়েছি। ওই ভিডিও দেখে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তবে তিনি ফিরে এসেছেন। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছি আমরা। আমাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
এর আগে, পারভেজকে অপহরণের পর রাতেই পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়ক এলাকায় কাঞ্চন ব্রিজের কাছে তাকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। পারভেজের পরিবারের সদস্যরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকেই অপহরণকারীরা পারভেজকে ফেলে যায় মাইক্রোবাস থেকে। পরে সেখান থেকে এক দোকানে গিয়ে বাসায় ফোন করেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
উল্লেখ্য, লালমাটিয়া সি ব্লকের ৩০ বাড়িতে স্ত্রী ও দুই ছেলে আবদুল্লাহ, আরহামকে নিয়ে থাকেন পারভেজ। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিতাস উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। পরের নির্বাচনে অবশ্য তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে হেরে যান।
পারভেজের খালাত ভাই ফাহাদ জানান, আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদীয় আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন পারভেজ।
অপহরণের এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে পারভেজের তিতাস উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল শিকদারের বিরুদ্ধে। পারভেজের খালাত ভাই ফাহাদ এর আগে বলেছিলেন, বছরখানেক আগেও তিতাস এলাকায় পারভেজের ওপর হামলা চালিয়েছিল সোহেল শিকদার ও তার সমর্থকরা। পারভেজের স্ত্রী তাহমিনা আফরোজও শুক্রবার সাংবাদিকদের কাছে একই কথা বলেছিলেন।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর